‘বরিশাল-খুলনা গ্রুপ’ ও ‘নোয়াখালী-হাতিয়া গ্রুপ’ নামে নগরীতে সক্রিয় দুইটি পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। রোববার (২৩ অক্টোবর) রাতে তিন দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের পর তারা বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশকে এই তথ্য দিয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া তিন ছিনতাইকারী হল, মো.মিজান হোসেন রানা (৩২), মো. কামাল (৪৫) এবং মো.রিয়াজ (৩০)।
রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর সোমবার সকালে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন জানান, তিন ছিনতাইকারী বরিশাল-খুলনা গ্রুপের। তাদের গ্রুপে ১০ জনের মতো আছে। সংঘবদ্ধভাবে তারা বরিশাল ও খুলনার বিভিন্ন এলাকা থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে আসে। কেউ পোশাক কারখানায়, কেউ সিএনজি অটোরিকশা চালানোর কাজ করে। এর আড়ালে মাসখানেক ধরে তারা নগরীতে বিভিন্ন উপায়ে ছিনতাই করে টাকাপয়সা নিয়ে বাড়ি চলে যায়।
‘তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে নোয়াখালী-হাতিয়া গ্রুপ নামে একটি ছিনতাইকারী চক্রের বিষয়েও তথ্য পেয়েছি। তারাও একই পদ্ধতিতে ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে। এই গ্রুপেও ১০-১২ জন আছে। এদের মধ্যে তিনজন মাসখানেক আগে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যায়। ’ বলেন ওসি মহসিন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া মিজান হোসেন রানা সম্প্রতি বরিশাল থেকে এসে সিএনজি অটোরিকশা চালানোর কাজ নেয়। তার তিন সহযোগীর মধ্যে রিয়াজ সবসময় তার সঙ্গে অটোরিকশায় থাকত। কামাল এবং আসাদ নামে আরেকজন ছিনতাইয়ের সরঞ্জাম বহন করত।
রোববার রাত ৮টার দিকে নগরীর মুরাদপুর থেকে হাটহাজারী যাবার জন্য মিজানের অটোরিকশায় (চট্টমেট্রো-থ-১২-৩৭৪৪) উঠেন কাঠ ব্যবসায়ী আলী উদ্দিন (৪৬)। চালক মিজানের পাশে বসা ছিল আসাদ। অটোরিকশা মুরাদপুর থেকে রেলক্রসিং এলাকায় যাওয়ার পর যাত্রীবেশে রিয়াজ উঠে। আতুরার ডিপো এলাকা থেকে যাত্রীবেশে উঠে কামাল।
আমিন জুট মিলের সামনে আসার পর কামাল ও রিয়াজ যাত্রী আলী উদ্দিনকে চেপে ধরে। আসাদ বেরিয়ে এসে আলী উদ্দিনের কোলের উপর উঠে মুখ চেপে ধরে। এরপর মিজান অন্ধকারের মধ্যে আধাঘণ্টা ধরে অটোরিকশা চালায়। তিনজন মিলে আলী উদ্দিনকে মারধর করে তার কাছ থেকে মোবাইল ও নগদ সাড়ে ৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর তার চোখে মরিচের গুঁড়া ঢেলে দিয়ে আমিন জুট মিল এলাকার পাশে অন্ধকারের মধ্যে তাকে ফেলে দেয়। এসময় আলী উদ্দিন চিৎকার করে উঠেন।
বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, আলী উদ্দিনের চিৎকার শুনে টহল পুলিশ এগিয়ে যায়। এসময় জনতাও পুলিশকে সহযোগিতা দেয়। পুলিশ এবং জনতা মিলে অটোরিকশাটিকে আটক করে। ভেতরে মিজান, কামাল ও রিয়াজকে পাওয়া যায়। তবে আসাদ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। জনতা তিনজনকে গণধোলাই দেয়।
ওসি জানান, আলী উদ্দিন দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। রিয়াজ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজনকেও তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
খবর বিজ্ঞপ্তি, বরিশালের খবর