দীর্ঘদিন দলের বাইরে থেকে নির্বাচন করে আসা পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. রস্তুম আলী ফরাজী দুই দশক পর পুরনো দলে ফিরেছেন। শনিবার জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে (জাপা) যোগ দেন।
১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও পরে যোগ দেন বিএনপিতে। ২০০১ সালে বিএনপির টিকেট নিয়ে সংসদ সদস্য হন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও বিরোধে জড়ানোর পাশাপাশি সংস্কারপন্থী হিসেবেও পরিচিতির ফলে ওই সময় তাকে বিএনপি মনোনয়ন দেয়নি।
২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান রুস্তম আলী ফরাজী। এরপর থেকে আর তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হননি। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে ফের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে জিতে আসেন।
ওই নির্বাচনের পর আরো ১৩ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সঙ্গে ফরাজীর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার কথা শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্রই থেকে যান তিনি।
ফরাজীকে স্বাগত জানিয়ে যোগদান অনুষ্ঠানে এরশাদ বলেন, “আজ বড় আনন্দের দিন, আমাদের রুস্তম আলী ফরাজী জাতীয় পার্টিতে ফিরে এসেছেন, হারানো বন্ধুকে ফিরে পেলাম, তাকে অভিনন্দন জানাই।”
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, এস এম ফয়সল চিশতী, সুনীল শুভরায়, অবসরপ্রাপ্ত মেজর খালেদ আখতার ও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
যোগদানের পর প্রতিক্রিয়ায় এমপি ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশে এরশাদ সাহেব পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করেন। উনি (এরশাদ) একজন ভদ্র মানুষ, তাই জাতীয় পার্টিতে যোগ দিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আগে আমি জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতাম। ১৯৯৬ সালে পিরোজপুর-৩ আসন থেকে পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করি। আসলে আমি একজন খাঁটি স্বতন্ত্র এমপি। যেহেতু নির্বাচন আসন্ন তাই দেখলাম বাইরে থেকে কী লাভ? দলে যোগ দেই। এজন্য এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন সময় আমার ভোটার-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলি। তারাও আমায় উৎসাহ দিয়েছেন।’
এলাকার মানুষের মতামত নিয়েই জাপায় যোগ দিয়েছেন জানিয়ে ডা. ফরাজী বলেন, কর্মী-সমর্থকরাও সবাই বলেছেন-এরশাদ সাহেবের পার্টিতে যোগ দিতে। তাই কোনো হৈ-হুল্লোড় নয়, আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো।’
আগামী নির্বাচনের টিকিট নিশ্চিত করতেই যোগদান কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে সংসদে বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করা এমপি ফরাজী বলেন, ‘তা তো অবশ্যই। তাছাড়া আমি এলাকায় জনপ্রিয়। নির্বাচনে টাকা পয়সারও দরকার আছে। তাই বাইরে না থেকে দলে ফিরলাম।’
শিরোনামপিরোজপুর, রাজনীতির খবর