খালি চোখে দেখা না গেলেও পরিষ্কার, ঝকঝকে বাড়িতেও কিন্তু বাস করে অসংখ্য রোগ-জীবাণু। বাড়ির কোথায়, কেন বেশি জীবাণু থাকে আর এ সব থেকে সতর্ক থাকার উপায়ই বা কী? জানাচ্ছেন একজন মাইক্রো বাইয়োলজিস্ট।
জীবাণু যেভাবে ঘরে ঢোকে
জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া বাড়িতে আসে বাড়ির মানুষের সাথে। তাছাড়া খাদ্যদ্রব্য তো রয়েছেই। খাবার-দাবারের সাথে খুব সহজেই জীবাণু ঘরে ঢুকে পড়ে। মাইক্রো বাইয়োলজিস্ট ড. মার্কুস এগার্ট জানান, প্রতিটি মানুষের শরীরে বাস করে প্রায় দেড় কেজি পরিমাণ জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া।
মুরগি থেকে
বাড়িতে বেশিরভাগ জীবাণুর জন্ম হয় রান্নাঘরে, বিভিন্ন খাবার থেকে৷ বিশেষ করে, মুরগির কাঁচা মাংস থাকে জীবাণুতে ভরা। তাই এই মাংসের সংস্পর্শে যেসব জিনিস আসে, সেখানেও জন্মায় ব্যাকটেরিয়া, যা বিভিন্ন রোগের জন্ম দিতে পারে। জানান প্রফেসর এগার্ট।
গরম পানি দিয়ে ধুতে হবে
স্পঞ্জের সাথে বাড়ি-ঘর পরিষ্কার করার অন্যান্য ন্যাকড়া বা ব্রাশও নিয়মিত বদলাতে হবে এবং এগুলি যতদিন ব্যবহার করবেন, ততদিন ব্যবহারের পর তা সাবান দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। সম্ভব হলে ফুটন্ত পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে সব রকম ন্যাকড়া, স্পঞ্জ ও ব্রাশ।
রান্নাঘরের স্পঞ্জ নিয়মিত বদলাতে হবে
কিচেনে অবশ্য সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে বাসন ধোয়ার স্পঞ্জে। তাই প্রতিবার ব্যবহারের পর স্পঞ্জের পানি ভালো করে চিপে রাখুন। এবং প্রতি সপ্তাহে না হলে, দু’সপ্তাহ অন্তর অন্তর নতুন স্পঞ্জ ব্যবহার করুন।
বাথরুম, টয়লেট
বাথরুম বা টয়লেটে রান্নাঘরের মতো অত বেশি জীবাণু না থালেও সেখানেও থাকে যথেষ্ট ব্যাকটেরিয়া। তবে মনে রাখবেন টয়লেট ব্যবহারের পর ফ্লাশ করার সময় অবশ্যই ঢাকনাটি বন্ধ করে দেবেন। তা না হলে জীবাণুগুলো চোখে, মুখে বা অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে।
হাত ধোয়া খুবই জরুরি
বাইরে গেলে আমাদের হাতে কত কিছুই না লাগে৷ পরে সেই হাতের জীবাণুই আবার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে যায়৷ তাই বাড়িতে ঢুকেই প্রথম কাজ যেন হয়, সাবান দিয়ে ভালো করে হাত দু’টো ধোয়া৷
কাপড় ধোয়া
সম্ভব হলে কাপড়-চোপড় গরম পানি দিয়ে ধোয়া উচিত। কাপড় ধোয়ার পানি যত গরম হবে ব্যাকটেরিয়া মরবে তত তাড়াতাড়ি।
আন্ডার গার্মেন্টস
গায়ের সাথে যেসব কাপড় লেগে থাকে, অর্থাৎ আান্ডার গার্মেন্টস বা অন্তর্বাস অবশ্যই গরম পানি দিয়ে ধোয়া উচিত৷ মেশিনে ধোয়ার সময়, এ সব কাপড়ের গায়ে কম তাপে ধোয়ার কথা লেখা থাকলেও গরম পানি দিয়ে ধোয়াই স্রেয়, জানান ড. এগার্ট। কারণ এক্ষেত্রে শুধু কাপড়ের সৌন্দর্য দেখলে চলবে না!
মনে রাখতে হবে
তবে সব জীবাণু বিপজ্জনক নয়৷ তাই বেশি ভয় পাওয়া বা বাড়াবাড়ির কিছু নেই বলেও জানান প্রফেসর মার্কুস এগার্ট। তার মতে, জীবাণু সম্পর্কে সকলেরই ‘সচেতন’ থাকা প্রয়োজন, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।ডিডব্লিউ