বার্তা পরিবেশক, অনলাইন::: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কালো পতাকা মিছিলে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। হয়েছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে বলে নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন। এসময় গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এবং তিন পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় জোনায়েদ সাকিকে পুলিশ গলাচেপে ধরে আটকানোর চেষ্টা করেন। এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, কয়েকজন পুলিশ সাকিকে চারপাশ থেকে আটকে রাখে। একজন সাকির গলা চেপে ধরছে। ফলে তার ধম আটকে যাওয়ার উপক্রম হয়। মুখ বিভৎস আকার ধারণ করে। অনেকে ছবিটি শেয়ার করে পুলিশের এমন আচরনের তীব্র নিন্দা করছেন।
ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাকি গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের কর্মসূচিতে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে আমার মাথা ফেটে গেছে।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে এ দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করছে বামজোট। এরই অংশ হিসেবে গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টিসহ বাম জোটভুক্ত দলগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ডেকেছিল।
মিছিলটি প্রেসক্লাবের সামনে থেকে কদম ফোয়ারার সামনে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় পুলিশের দেয়া দেয়া ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান নেতাকর্মীরা। বেলা ১টার দিকে মৎস্য ভবনের সামনে আবারও পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বাম জোটের নেতা-কর্মীরা। তারা ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে চাইলে পুলিশের বাকবিতণ্ডা ও একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়।
একপর্যায়ে মিছিল থেকে ইঁটপাটকেল ছুড়ে মারার অভিযোগ তুলে পুলিশ সদস্যরা নেতা-কর্মীদের ওপর শুরু করে লাঠিচার্জ। তাদের মারধর করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। তিন পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এসময় মৎস ভবন মোড় থেকে প্রেসক্লাবের দিকে যান চলাচল প্রায় ২০ মিনিট বন্ধ থাকে।
২০১৮ সালের ১৮ জুলাই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ-খালেকুজ্জামান), গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন ও বাসদ (মার্ক্সবাদী)—এই আটটি দল মিলে গঠিত হয় বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ আল ক্বাফী রতন।
ক্বাফী রতন সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের হামলায় জোটের নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকীসহ ২৫-২৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ডিএমপি রমনা জোনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তাদের (বাম জোটের নেতাদের) অনুরোধ করেছিলাম যেন ব্যারিকেড না ভাঙে। কিন্তু তাদের নেতা-কর্মীরা কথা শোনেননি। তারা প্ল্যাকার্ডের সঙ্গে থাকা লাঠি ও বাঁশ দিয়ে পুলিশের উপর হামলা করে। পরে আমাদের পাঁচ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন দুজন। আমরা অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। পরে আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি।
রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চার পাঁচ জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা ব্যবস্থা নেব।
রাজনীতির খবর