বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৮:৫২ অপরাহ্ণ, ১১ এপ্রিল ২০১৬
ঝালকাঠি: ঝালকাঠির পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট হায়দার হোসাইন হত্যার ৯ বছর ও রায় ঘোষণার ১ বছর অতিবাহিত হলেও কার্যকর হয়নি। গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারী বুধবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আব্দুল হালিম অভিযুক্ত আসামী তানভীর, মুরাদ, আমীর উপস্থিত ছিলেনএবং বেল্লাল ও সগির (পলাতক) সহ ৫ জনের ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন। এঅবস্থায় নিহত পিপি হায়দার হোসাইনের পরিবারের সদস্যরা ফাঁসির আদেশ দ্রুত কার্যকরের দাবী জানিয়েছেন। ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর জেএমবির বোমায় ঝালকাঠির দু’বিচারক সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাড়ে নিহতের ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনাকারী পিপি হায়দার হোসাইনকে জেএমবি সদস্যরা ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল গুলি করে হত্যা করেন। দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারী উল্লেখিত ৫ জনকে আদালত ফাঁসির আদেশ দেয়।
জানাগেছে, শীর্ষ জঙ্গিদের ফাঁসি কার্যকরের ২০ দিন পর বিচারক হত্যা মামলা পরিচালনাকারী পিপি অ্যাডভোকেট হায়দার হোসেনকে জেএমবি সদস্যরা ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল গোরস্থান মসজিদে থেকে এশার নামাজ পড়ে বের হবার সময় গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত’র একমাত্র ছেলে তারিক বিন হায়দার বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৭, তারিখ-১২ এপ্রিল ২০০৭) দায়ের করেন। মামলার এজাহারে কারো নাম উল্লে¬খ করা না হলেও শীর্ষ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনার কথা উল্লে¬খ করা হয়।
পিঁপি হত্যা মামলা শুরু থেকে তদন্ত করেছেন ঝালকাঠি থানার উপ-পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা, সিআইডি পিরোজপুর ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক আমির হোসেন, পরিদর্শক শাহজাহান খান, তোফাজ্জেল হোসেন। চার্জশিটের আগ পর্যন্ত এ চারজন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। সর্বশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়ে সিআইডি পিরোজপুর ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক মোশারেফ হোসেন। তিনি তদন্ত সম্পন্ন করে জেএমবির পাঁচ জঙ্গির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (নং-৫) দাখিল করেন।
মামলা দায়েরের ৩৩ মাস পর ২০১০ সলের ১৭ জানুয়ারি রবিবার বিকেলে ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়। চার্জশীটভূক্ত পাঁচ জঙ্গির মধ্যে বরগুনার তালতলী উপজেলার আমিনুল ওরফে আমির হোসেন (৩৭), খুলনার মুরাদ হোসেন (২০) ও বরগুনার আবু শাহাদাত মোহাম্মদ তানভীর (৩১), পলাতক রয়েছেন ঝালকাঠির বিকনা গাজী বাড়ি মসজিদের ইমাম ও বরগুনার তালতলী উপজেলার বেল¬াল হোসেন (২৭) ও ঢাকার উত্তরখানের সগির হোসেন ভূঁইয়া (৩৮)।
নিহত পিপি’র ছেলে ও মামলার বাদী তারিখ বিন হায়দার বলেন, মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। তবে ফাঁসির দন্ডাপ্রাপ্ত জেএমবি ৫ সদস্যের ফাঁসির রায় এখনো কার্যকর হয়নি। এছাড়া হত্যাকারীদের মধ্যে ২ জন এখনো পলাতক থাকায় পুনরায় আরো কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলেও আতঙ্কে রয়েছেন বলে তিনি জানান। আশঙ্কা নিহত পিপি’র সহধর্মিনী কহিনুর বেগম বলেন, যতদ্রুত সম্ভব রায় কার্যকর করা না হলে উচ্চ আদালত থেকে আসামীরা ছাড়া পেয়ে যাবে কলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পিপি এম আলম খান কামাল বলেন, ৫ জনের ফাঁসির রায়ের মধ্য দিয়ে জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আসামীদের নথিপত্র উচ্চ আদালতে গেলেও এর পরে কি হয়েছে এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। তবে উচ্চ আদালতের আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রায় কার্যকর করতে সময় লাগে।