ঝালকাঠি/ বেওয়ারিশ কুকুরে আতঙ্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঝালকাঠির নলছিটি পৌর শহরে আশঙ্কাজনক হারে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় ২০-৩০টি করে কুকুরের দল। এতে আতঙ্কে রয়েছে পৌরবাসী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পৌরসভায় জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক ইনজেকশন না থাকায় এ আতঙ্ক আরও বেড়েছে। চলতি বছরে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের কামড়ে দুই শতাধিক লোক আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বাসস্ট্যান্ড, পৌরসভার সামনের অলিগলি, উপজেলা পরিষদ চত্বর, পুরান বাজার, লঞ্চঘাট, গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ রোড, থানারপুল, সরকারি ডিগ্রি কলেজ রোড, ফায়ার সার্ভিস মোড়, নান্দিকাঠি নুরানি মাদ্রাসা, সরকারি মার্চেন্স মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নলছিটি সিনিয়র মাদ্রাসার সামনের সড়কে বেওয়ারিশ কুকুরের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি।
এসব কুকুরের উৎপাত পৌরবাসীর আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক সময় কুকুরের উৎপাত বন্ধে পৌরসভা ও স্থানীয় প্রশাসন নিধনের ব্যবস্থা নিত। কিন্তু উচ্চ আদালতের রায়ে কুকুর নিধন নিষিদ্ধ করার পর থেকেই বাড়ছে কুকুর। বন্ধ্যাকরণ কার্যক্রম সঠিকভাবে না হওয়াকে দুষছেন অনেকে।
শনিবার সকালে পৌর ভবনের সামনের মাঠে, প্রাণিসম্পদ অফিসের মূল ফটক, পুরান বাজারের মাছ-মাংসের দোকানের সামনে ও একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে সাত-আটটি কুকুরের দলকে এদিক ওদিক ঘুরতে দেখা গেছে। ভোর ৫টা ও রাত ৯টার পর সবচেয়ে বেশি বেপরোয়া ও আক্রমণাত্মক থাকে কুকুর বাহিনী। প্রতিদিনই শিক্ষার্থীসহ কেউ না কেউ কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। পৌরসভার চারপাশে ২০টির মতো স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাওয়া-আসা করে।
কুকুরে কামড়ের রোগী বাড়লেও দীর্ঘদিন ধরে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আক্রান্ত রোগীদের যেতে হচ্ছে ২০-৩০ কিলোমিটার দূরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। স্ট্যাম্প ভেন্ডার নাহিদ হোসেন বলেন, কুকুরের দল সাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল দেখলে দলবেঁধে ছুটে এসে আক্রমণ করে। তাঁকেও কয়েক দিন ধাওয়া করেছে।
খাসমহল রোডের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় প্রায়ই কুকুরের উৎপাতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। হালিমা বেগম বলেন, তাঁর মেয়ে অসুস্থ হলে রাতের বেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাত-আটটি কুকুর তাদের ধাওয়া করে কামড়ে দেয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শিউলি পারভিন জানান, এক বছর ধরে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই। অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
ইউএনও নজরুল ইসলাম জানান, পৌর মেয়রের সঙ্গে কথা বলে এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহেদ খান বলেন, বিষয়টি তাদের নজরে রয়েছে। দ্রুত সময়ে কুকুরের বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ঝালকাঠির খবর, বিভাগের খবর