বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬
নারীর টানের পর এবার কর্মের টানে মানুষের ঢল নামে বরিশাল আধুনিক নৌ বন্দর এবং কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড নথুল্লাবাদে। বসা তো দূরের কথা লঞ্চ ও বাসগুলোতে একটু দাড়ানোর স্থান পেতে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়েছে। তাতে হয়তো কেউ কেউর ভাগ্যে একটু জায়গাও মিলে যায়, কিন্তু ততক্ষণে ধস্তা-ধস্তিতে ক্লান্ত অনেকে। চলতি পথে বিরতী দিলেই ‘জায়গা নাই, উঠেন না’ বললেও চলে সেই যুদ্ধ। সবারই যে তাড়া। কর্মস্থলে ফেরার যুদ্ধে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) লঞ্চ-বাস তীব্র যাত্রী চাপ লক্ষ্য করা গেছে।’ যাত্রী চাপ সামলাতে বরিশাল নৌ বন্দর থেকে ১৫ লঞ্চ, দুই স্টিমার ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। তবে, তিল ধারণের ঠাই ছিল না লঞ্চ ও স্টিমারে।
অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন- এ সুযোগে ডেকে জায়গা বিক্রি করছে অসাধুরা। অপরদিকে কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতি ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পর পর বাস ছেড়ে গেছে।’ বরিশাল নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রিয়াদ হোসেন জানান, বরিশাল থেকে কীর্তনখোলা, দীপরাজ, কালাম খান, টিপু, ফারহান, সুন্দরবন, পারাবত এবং সুরভীসহ মোট ১৫টি লঞ্চ রাত ৮ টার মধ্যে ঢাকার উদ্যোশে ছেড়ে গেছে। এতে করে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক যাত্রী ঢাকা গেছেন। তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী কোনো লঞ্চই তুলতে দেয়া হয়নি। নির্ধারিত লোড সাইন অতিক্রম করার আগেই লঞ্চ ছেড়ে দেয়ার জন্য মাস্টারদের বলা হয়েছিল।
বরিশাল থেকে ঢাকাগামী লঞ্চের যাত্রী আবুল কালাম অভিযোগ করে বলেন- তিনি বিকাল ৪ টায় তার খালাকে নিয়ে বরিশাল লঞ্চঘাটে এসে সুরভীর ডেকের একটি স্থানে খালি পেয়ে নিজেদের জন্য জায়গা নেন। সেখানে চাঁদর বিছানোর পর একটি লোক এসে ৫০ টাকা দাবি করে নয়তো চাঁদর বিছানো যাবে না বলে জানায়। পরে তাকে ৫০ টাকা দিলে সে চলে যায়।’
এ বিষয়ে সুরভী কর্তৃপক্ষ বলেন, এ ধরনের কাজ লঞ্চের কোনো স্টাফ করতে পারে না। যদি করে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বহিরাগত দালালরা এটা করে থাকতে পারে। তবে তারা সু-চতুর হওয়ায় তাদের ধরাটাও কঠিন বলে জানান তিনি।’
এদিকে লঞ্চে টিকেট বা জায়গা না পেয়েও ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেকে। যাত্রী ও বরিশাল নগরীর বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, লঞ্চগুলোর ডেকের সিটতো পূর্ণ হয়ে গেছে অনেক আগেই। এমনকি কেবিনের আশপাশও ভরে গেছে যাত্রীতে। তাই কি করবেন বুঝতে পারছেন না। কিন্তু তাকে ঢাকায় যেতেই হবে।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সহ-সভাপতি ও সুন্দরবন লঞ্চের সত্ত্বাধিকারী সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, শনিবার যাত্রী বেড়ে গেছে, তবে লঞ্চ মালিকরা বাড়তি যাত্রীর জন্য আগে থেকেই বাড়তি লঞ্চের ব্যবস্থা রেখেছেন। এ জন্য তেমন কোন সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি। লঞ্চের ডেক, কেবিনের সামনের বারান্দাসহ কোনো স্থানেই খালি জায়গা নেই। এদিকে সকালে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, প্রচুর যাত্রীদের ভিড় ছিল। কেউ কেউ মাইক্রোবাসে ছুটছেন কর্মস্থলে।’
বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আফতাব হোসেন জানান, যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে ঢাকা-বরিশাল রুটের প্রতিটি বাস কোম্পানি তাদের নিয়মিত সার্ভিসের পাশাপাশি স্পেশাল সার্ভিসও দিচ্ছেন। প্রায় ১৫ থেকে ৩০ মিনিট অন্তর একটি করে বাস এ টার্মিনাল ত্যাগ করেছে।’