বরিশাল মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের বিতর্কিত অফিসার মো. নুরে আলমের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন আঞ্চলিক একটি পত্রিকার এক সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
আদালতের বিচারক মো. আনোয়ারুল হক মামলাটি আমালে নিয়ে বরিশাল দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী কাওছার মাহমুদ মুন্না বরিশালের আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা ‘আজকের সময়ের বার্তা’র স্টাফ রিপোর্টার বলে জানিয়েছেন ওই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশন এম লোকমান হোসেন।’
অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার নুরে আলম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে- বরিশাল নগরীর কাউনিয়া পেছনের স্কুল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ্ আল মামুনের বিরুদ্ধে মাদক বিক্রির মৌখিক অভিযোগ এনে তার বসতঘরে গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে একদল ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়।
ওই সময় ডিবি পুলিশের এসআই নুরে আলম এসে মামুনের পক্ষে সুপারিশ করেন। মামুন ওই সময় ডিবি পুলিশের উপস্থিতিতে তার ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন তালুকদার ও ভাবীকে মারধর করেন।
এমনকি স্বর্ণের চেইন ও ঘড়ি ছিনিয়ে নিয়ে যান।
এ ঘটনা শোনা মাত্রই পত্রিকা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলার বাদী কাওছার হোসেন তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকার পরিচয় শোনা মাত্রই আসামী নুরে আলম ডিবি পুলিশের সদস্যদের সহায়তায় তাকে আটক করেন। এবং ঘটনাস্থল বসতঘরের একটি কক্ষে নিয়ে বেদম মারধর করেন।
ওই ছিনিয়ে নেন মুঠোফোন, তল্লাশি করে বাদীর শরীর।
নুরে আলম সংবাদপত্রের পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে বাদী পত্রিকার ভিজিটিং কার্ড দিয়ে অফিসে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু আসামী নুরে আলম বাদীর হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে ছবি তোলেন এবং ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।
ওই সময় নুরে আলম দম্ভোক্তি করেন ঘুষ না পেলে সংবাদকর্মী কাওছারকে ‘ইয়াবা’ দিয়ে চালান কিংবা মুঠোফোনে ‘পর্নোগ্রাফি’ দিয়ে মামলায় গ্রেপ্তার দেখাবেন।
কাওছার বহু অনুরোধ করেও কোন সহযোগিতা পায়নি।
নুরে আলম তখন বাদীর মোবাইল দিয়ে ৫ নম্বর সাক্ষী অর্থাৎ পত্রিকার সম্পাদক লোকমান হোসাঈনের সাথে কথা বলান।
৫ নম্বর সাক্ষী আটকের বিষয় শুনে ১ ও ৪নম্বর স্বাক্ষীদের ঘটনাস্থলে পাঠায়।
তখন কাওছার ওই পত্রিকার ফটো সাংবাদিক ও আরও একজন সাক্ষীর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা এবং তার সাথে থাকা ৩ হাজার টাকা মিলিয়ে সর্বমোট ১৮ হাজার টাকা এসআই নুরে আলমকে ঘুষ দিয়ে মুক্ত হন।
ওই সময় টাকা নেয়ার পরে অর্থের লেনদেনের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য ক্রসফায়ার দেয়ার ভয় দেখান।
এমনকি পত্রিকার কর্মরত সকলকে আগামীতে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় নুরে আলম।”
শিরোনামবরিশালের খবর