বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৭:২৬ অপরাহ্ণ, ২৪ জুলাই ২০১৬
অর্থপাচারের মামলায় নিম্ন আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। সাজা কার্যকরের জন্য তাকে দেশে ফেরত আনতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশনকে (ইন্টারপোল) চিঠি দেবে পুলিশ। পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় পলাতক আসামি হিসেবে ২০১৫ সালে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করেছিল ইন্টারপোল। তবে এর কয়েক মাস পরেই রেড অ্যালার্ট প্রত্যাহার করে ইন্টারপোল। তবে এই রেড অ্যালার্ট নোটিশ কী কারণে প্রত্যাহার করা হয়েছিল বিষয়টি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স জানতো না।
২০০৮ সালে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। তিনি দেশে না ফেরায় পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেফতারের পর থেকেই তারেকের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন মামুন কারাগারে। তাই সাজাপ্রাপ্ত এই আসামিকে ফেরত আনতে ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হবে।
এ বিষয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের ন্যাশনাল কাউন্সিল ব্যুরোর সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-এনসিবি) রফিকুল গণি বলেন, সাধারণত আদালতের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এবং ওয়ারেন্ট জারি হওয়ার পর ইন্টারপোলকে জানানো হয়। এক্ষেত্রেও তাই হবে। রায়ের কপি ও ওয়ারেন্ট হাতে পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্র জানায়, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর হেডকোয়ার্টার্স থেকে ইন্টারপোলকে ওয়ান্টেড নোটিশ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়া হবে।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের এক্সট্র্যাডিসন ট্রিটি বা বন্দিবিনিময় চুক্তি রয়েছে। ফলে দুই দেশের মধ্যে আসামিদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ফেরত এনেছিল বাংলাদেশ। বিপরীতে ভারতের আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতে পাঠানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের এ ধরনের কোনো চুক্তি নেই। তাই ইন্টারপোল ছাড়া তাকে ফিরিয়ে আনার প্রায় ‘অসম্ভব’।
তারেককে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান বলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের ‘এক্সট্র্যাডিসন ট্রিটি’ বা বন্দিবিনিময় চুক্তি নেই। যদি সে নিজ ইচ্ছায় দেশে ফিরে আত্মসমর্পণ না করে তবে একমাত্র ইন্টারপোলের মাধ্যমেই তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
একইসঙ্গে তারেকের বন্ধু ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের ৭ বছরের কারাদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে। তবে তাকে বিচারিক আদালতের দেয়া ৪০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড কমিয়ে ২০ কোটি টাকা করা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ে বিচারিক আদালতকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয়া হয়। পলাতক তারেক রহমান আত্মসমর্পণ করলে বা তাকে গ্রেফতার করা গেলে সেই সময় থেকে তার দণ্ড কার্যকর হবে বলে হাইকোর্ট জানিয়েছেন।