বাবুগঞ্জ: উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়নে যখন ভিজিডি ও ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অন্তহীন অভিযোগে পাহাড় ঠিক তখন এর উল্টো চিত্র উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়ন পরিষদে। চাল নিয়ে নেই কারো সামান্যতম কোনো অভিযোগ। পরিষদের সামনে জনসম্মুখে ডিজিটাল পালায় মেপে ভিজিডি কার্ডের ৩০ কেজি চালের ৩০ কেজি এবং ভিজিএফ কার্ডের ১০ কেজি চালের ঠিক ১০ কেজিই বিতরণ হয়েছে গত দু’দিন। যারা কার্ড পায়নি অথচ চাল নিতে এসেছে তাদেরকেও দেয়া হয়েছে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ঈদ অনুদান।
এছাড়াও পরিষদের গ্রাম পুলিশ সদস্যদের প্রত্যেককে পারিবারিক অবস্থা ভেদে জনপ্রতি ২ থেকে ৫ হাজার টাকা ঈদ অনুদান দেয়া হয়েছে। অপরদিকে দেহেরগতি ইউনিয়নের প্রসিদ্ধ নতুন হাট ও বাহেরচর গরুর হাটকে খাজনামুক্ত করে এখন আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন উপজেলার দেহেরগতি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৪টি ইউনিয়নেই ভিজিডি ও ভিজিএফ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সেখানে ভিজিডি কার্ডে ৩০ কেজির স্থলে ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ২২ কেজি চাল এবং ভিজিএফ কার্ডে ১০ কেজির পরিবর্তে গড়ে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭ কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তবে ব্যতিক্রম কেবল দেহেরগতি ইউনিয়ন।
সেখানে কোনো অভিযোগকারী খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই প্রতিবেদকের সাথে গতকাল কথা হয় চেয়ারম্যানের বিপক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীর এজেন্ট মনির হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, দলীয় কারণে আমি প্রকাশ্যে সবসময় মশিউর চেয়ারম্যানের বিরোধিতা করি। তবে ভেতরে ভেতরে আমি তার আদর্শকে শ্রদ্ধা করি। তিনি কথায় ও কাজে সত্যিকারের একজন সৎ মানুষ। মাত্র দেড় বছরে তিনি দেহেরগতি ইউনিয়নে যে কাজ দেখিয়েছেন দেড় যুগেও কোনো চেয়ারম্যান তা দেখাতে পারেনি। নাম গোপন রাখার শর্তে অভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা।
তিনি বলেন, সারা উপজেলায় কোরবানির গরুর হাটে খাজনার নামে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে থেকে জুলুম করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। সেখানে দেহেরগতির ২টি হাটেই খাজনামুক্ত করে দিয়েছেন মশিউর চেয়ারম্যান। তার সাথে আমার রাজনৈতিক বিরোধ থাকলেও ভালোকে ভালোই বলতে হবে বলে মন্তব্য করেন ওই প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা। এদিকে এ প্রসঙ্গে জানতে নিভৃতচারী দেহেরগতি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তথ্য দিতে অনাগ্রহী ছিলেন।
প্রচারবিমুখ এই চেয়ারম্যান বলেন, ভালো কাজ করার জন্যই জনগন আমাকে নির্বাচিত করেছে। তাছাড়া দান-অনুদান কোনো প্রচারের বিষয় নয়। এসব নিয়ে কিছু লেখার দরকার নেই বলে তিনি এই প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন। তাই মশিউর রহমানের কর্মকান্ড সম্পর্কে জানতে দেহেরগতি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান সিকদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মশিউর রহমান ওয়ার্কার্স পার্টির থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও অতি স্বল্প সময়ে তার কর্মকান্ডের দ্বারা ইতিমধ্যে তিনি প্রায় সব দলের মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন। তিনি সব দল-মত নির্বিশেষে এখন সবার প্রিয় এক অনন্য ও ব্যতিক্রমী চেয়ারম্যান।
বরিশালের খবর