১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

তোফাজ্জলকে হত্যার আগে পরিবারের কাছে চাওয়া হয়েছিল ২ লাখ টাকা

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৩৭ অপরাহ্ণ, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে বরগুনার পাথরঘাটার তোফাজ্জলকে (৩০) পিটিয়ে হত্যার আগে পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের তালুকের চরদুয়ানি তার গ্রামের বাড়িতে গেলে তোফাজ্জলের ভাবি শরিফা বেগম এমন দাবি করেন।

শরিফা বেগম বলেন, ‘বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তোফাজ্জল প্রথম একটি নম্বর থেকে কল করে জানান, ভাবি আমাকে মোবাইল চোর সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আটকে মারধর করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তোফাজ্জলের সঙ্গে কথপোকথনের কিছুক্ষণ পর আবার নতুন একটি নম্বর দিয়ে আমাকে কল করে জানানো হয়, আপনি যদি তাকে বাঁচাতে চান তবে এখনই আমাদের বিকাশ নাম্বারে ২ লাখ টাকা পাঠান।

তা না হলে আমরা মেরে ফেলবো। এরপর আমি ভয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখি। সকালে জানতে পারি আমার দেবরকে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যাকাণ্ডে যারা সম্পৃক্ত তাদের বিচার দাবি করছি।’

পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুন বলেন, তোফাজ্জেল মানসিক ভারসাম্যহীন এটা আমি জানি। তবে তার সঙ্গে যেটা হয়েছে এটা অমানবিক। যেসব নম্বর থেকে টাকা চাওয়া হয়েছে সেসব নাম্বার বর্তমানে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

বুধবার সন্ধ্যায় চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে আটক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। পরে কয়েক দফায় মারধর করা রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যায় হলে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছিল। এমন সময় হঠাৎ তোফাজ্জল নামে যুবক হলে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা দুপুরে ছয়টি মোবাইল চুরির ঘটনার চোর সন্দেহে মূল ভবনের অতিথি কক্ষে নিয়ে তাকে মারধর ও জেরা করতে থাকে।

একপর্যায়ে, তাকে নিয়ে হল ক্যানটিনে খাওয়ানো হয়। এরপর এক্সটেনশন ভবনের অতিথি কক্ষে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বুক, পিঠ, হাত ও পায়ে ব্যাপক মারধর করেন একদল শিক্ষার্থী।

মারধরের ফলে ওই যুককের পা থেকে রক্ত বের হতে থাকে। এরপর রাত পৌনে ১০টার দিকে ফের মূল ভবনের অতিথিকক্ষে নিয়ে মারধর করা হয়। এরপর ১০টার দিকে প্রক্টোরিয়াল মোবাইল টিমের সদস্যরা এলে মারধরকারীরা তাকে তাদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানান।

পরে কিছু শিক্ষার্থী ও কয়েকজন হাউস টিউটরের সহায়তায় তাকে প্রথমে শাহবাগ থানায় এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

164 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন