১৩ িনিট আগের আপডেট সন্ধ্যা ৬:২০ ; মঙ্গলবার ; সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩
EN Download App
Youtube google+ twitter facebook
×

দেশী মাছে আস্থা চিত্তরঞ্জনের

বরিশালটাইমস রিপোর্ট
৫:২৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০১৬

বরিশাল : পাবদা, কৈ, মাগুর আর শিং, টেংরা দেশীয় প্রজাতির এই মাছের চাষ করেন তিনি। এতেই তার আস্থা। আর ভরসা রাখেন মাছ বিক্রির টাকায় এক বছর পরেই মাছের ভাসমান খাদ্য উৎপাদনের জন্য কিনবেন কোটি টাকা মূল্যের মেশিন। স্বপ্নের তিনতলা ভবনের কাজ সম্পন্নের পথে। মাছ চাষে সম্ভাবনার বরিশাল অঞ্চলে হারাতে বসা দেশী মাছের প্রজাতির ফের প্রসার ঘটাবেন। এমন স্বপ্নদেখনেওয়ালা বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বলতে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের বাড়ি লাগোয়া বসতি চিত্তরঞ্জন বেপারীর (৫৫)।

সম্প্রতি কথা হয় চিত্তরঞ্জনের গ্রামের বাড়ি হরহরে। এখানেই রয়েছে তারা বিউটি মৎস্য খামার ও মাছের খাদ্য উৎপাদন কারখানা। পরিশ্রমের সাথে উদ্যম যুক্ত হয়ে তাকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। স্বপ্ন দেখতে পারছেন আর দেখানোর প্রত্যয়ের বাস্তবতার মিল পাওয়া যায় তার কর্মকান্ড দেখে। নিয়ে গেলেন পাবদা মাছের চাষ করা পুকুরে।

শোনালেন, ১৯৯৯ সাল থেকে মাছ চাষের যাত্রা শুরু থেকে বর্তমানের কথা। তখন কেবল কার্প জাতীয মাছ রুই, কাতলা, মৃগেলের চাষ করতেন। পুকুরে বেশি করে মাছের পোনা ছাড়লে বেশি মাছ মিলবে, এমন ধারণা থেকেই চাষ করে বছর শেষে আধা কেজি ভরের মাছ পেতেন। ওই বিক্রি করে তেমন লাভের দেখা মিলতো না। এরপর তেলাপিয়ার চাষ করে কিছুটা বাড়তি আয় করে পুকুর লিজ নেতে থাকেন। এমন অধ্যায়ের সময় ২০১২ সালের শুরুর দিকে দেখা হয় ওয়ার্ল্ড ফিসের এআইএন প্রকল্পের কর্মীদের সাথে। তাদের কাছ থেকে ৮টি প্রশিক্ষণ পেয়ে শুরু করেন পথচলা। চিত্তরঞ্জন বলেন, পুরানো ধারণা বদলে পুকুর তৈরী, পোনা ছাড়ার পরিমাণ, সময় অনুযায়ী সুষম খাবার বন্টন, রোগবালাই এ সম্পর্কে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান অনুযায়ী মাছ চাষে ফল পেতে থাকি।

এই পদ্ধতিতে চাষ করে এক বছরে ২ থেকে ৫ কেজি ভরের রুই বা কাতলা মাছ পেতে থাকি। তবে সাদা মাছের পাশাপাশি বিলুপ্ত হতে চলা দেশী মাছ কৈ, শিং, মাগুর, পাবদা ও টেংরা চাষে মন টানায় ওদিকে ঝুঁকে পড়ি। এখন সবমিলিয়ে আমার ২০ একরের পুকুর। বলতে গেলে সব পুকুরই লিজ নেয়া। এরমধ্যে ৫ একর আয়তনের ৩টি পুকুর রয়েছে পাবদা মাছের জন্য। বর্তমানে সাড়ে ৩ লাখ পাবদা রয়েছে পুকুরে।

কৈ আর তেলাপিয়া মাছ রয়েছে ১ লাখ করে। শিং ও মাগুর ৫০ হাজার আর রুই, কাতলা রয়েছে ১০ হাজারের ন্যায়। পাবদা মাছ নতুন বলে বাজার দর ভালো পাওয়াতে বেশি চাষ করেছেন। আলাপকালে বলেন, ওয়ার্ল্ড ফিসের সাথে প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর আমার কাজ দেখে তারা বরিশালে নিয়ে আরো উন্নত প্রশিক্ষণ করায়ে লোকাল সার্ভিস প্রোভাইডার (এলএসপি) হিসেবে গড়ে তোলেন। উন্নত প্রশিক্ষণে তিনি মাঠের ডিম থেকে রেনু এবং রেনু থেকে পোনা উৎপাদনের কৌশল রপ্ত করেন। তাই অনেকটা গৌরবান্বিত ভঙ্গিতে জানান তার পুকুরে থাকা ব্রুড থেকেই পাবদা মাছের রেনু উৎপন্ন করেছেন।


পরিসংখ্যানে দেখান ১০ টায় কেজি শিং মাছ ৫ থেকে ৬’শ টাকায়, মাগুর মাছের কেজি হয় ৪ থেকে ৫টায় এটাও বিক্রি করতে পারেন ৫ থেকে ৬’শ টাকায় আর পাবদা মাছ কেজি ভর হতে প্রয়োজন হয় ২০ টি মাছের। পাবদার কেজি ৮’শ থেকে হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারেন। পাবদার বেলায় ২০১৫ সালে ২৫ লাখ টাকা খরচ করে ৯০ লাখ টাকা বিক্রি করেছিলেন। এবছর পাবদা চাষে ১০ লাখ টাকার ন্যায় খরচ হয়েছে। এখান থেকে ২৫ থেকে ২৭ লাখ টাকা পাবেন বলে আশা রাখেন। এই পাবদা বিক্রির টাকায় তিন তলা পাকা ভবন তৈরী করছেন।

এখন মাছের খাদ্য তৈরীর কারখানাটি আরো বড় পরিসর বলতে মাছের ভাসমান খাদ্য তৈরীর উপযোগি করতে চান। এটা ২০১৭ সালে মধ্যে সম্ভব হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। চিত্তরঞ্জন বলেন, ওয়ার্ল্ড ফিসের প্রশিক্ষন পেয়ে ফিস ফিডের মেশিন করেন নিজ বাড়ির আঙ্গিনায়। শুটকি, সয়ামিন, রাইস পলিশ, ভুসি, খৈল, ভুট্টা, ময়দা ও লাইম স্টোন এসব উপাদান প্রয়োজন হয় মাছের খাদ্য তৈরীতে।

এগুলো কুয়াকাটা, মস্তফাপুর, স্বপরূপকাঠী ও স্থানীয় বাজার থেকে কিনে থাকেন। তার মেশিনে উৎপাদন ক্ষমতা মাসে ৩০ টন হলেও বিক্রির জন্য বানিজ্যিক অনুমতি নেই বলে গড়ে ১০ টনের ন্যায় ফিসফিড করেন। তবে বাজারের চেয়ে প্রোটিনের মান তারা খাবারে যথার্থ বলে স্থানীয় চাষিদের কাছে বেশ চাহিদা আছে।

এজন্য বাড়ির কাজ সম্পন্ন হলেই মাছের ভাসমান খাবারের মেশিন কিনবেন। এতে কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। মাছ বিক্রির টাকাতেই এটা করতে পারবেন বলে প্রত্যয়ী মৎস্য চাষী চিত্তরঞ্জন বেপারী।

প্রত্যয়ের কথা শুনে ওয়ার্ল্ড ফিসের ইউএসএড’র এআইএন প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. জাকির হোসেনের অভিমত-চিত্ত দাদা পারবেন। অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞান ও নিজ অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটায়ে নতুন নতুন চিন্তা করেন তিনি। প্রশিক্ষণ পাওয়া মৎস্য চাষীদের তারা মৎস্য বিভাগের সাথে যোগসূত্র তৈরী করে দিয়েছেন।

এতে করে তাদের ওয়ার্ল্ড ফিসের প্রকল্প বন্ধ হলেও চাষীরা সরকারী প্রনোদনা বা কর্মকর্তাদের পরামর্শ সহজে পাবেন। আর চিত্তরঞ্জনের ন্যায় সফল চাষীদের হাত ধরেই বরিশাল অঞ্চলে একদা মাছ হয়ে উঠবে প্রধান অর্থ উপার্যনের মাধ্যম বলে মনে করেন প্রজেক্ট ম্যানেজার।

টাইমস স্পেশাল, বরিশালের খবর, স্পটলাইট

আপনার ত লিখুন :

 
ভারপ্রাপ্ত-সম্পাদকঃ শাকিব বিপ্লব
© কপিরাইট বরিশালটাইমস ২০১২-২০১৮ | বরিশালটাইমস.কম
বরিশালটাইমস মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
ইসরাফিল ভিলা (তৃতীয় তলা), ফলপট্টি রোড, বরিশাল ৮২০০।
ফোন: +৮৮০২৪৭৮৮৩০৫৪৫, মোবাইল: ০১৮৭৬৮৩৪৭৫৪
ই-মেইল: barishaltimes@gmail.com, bslhasib@gmail.com
© কপিরাইট বরিশালটাইমস ২০১২-২০১৮
টপ
  মুখোমুখি শাহরুখ-প্রভাস: একই দিনে মুক্তি পাবে ‘ডাঙ্কি’-‘সালার’  তামিম ইকবাল থাকছেন না বিশ্বকাপ স্কোয়াডে!  প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দেন তা বাস্তবায়ন করেন: এমপি শাওন  মোহাম্মদপুরের ‘রক্তচোষা’ জনি গ্রেপ্তার  সিজার টেবিল থেকে জীবন বাঁচাতে ওসির দরজায়  বরগুনায় হৃদয় হত্যা: ১৬ কিশোরের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা  ছাত্রলীগ নেত্রীর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ রাবির ভিসি, প্রো-ভিসি  বরিশালে ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি ৪০৭ ডেঙ্গুরোগী, মৃত্যু ৩  গণপিটুনির ভয়ে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ পাঠাতে বলল চোর  নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে : ইসি আনিছুর