দ্বিতীয় সন্তানকে দেখতে গিয়ে শ্যালিকাকে ধর্ষণ করলেন পুলিশ দুলাভাই
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: লালমনিরহাটের আদিতমারীতে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রী ও চাচাতো শ্যালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযোগ দেয়ার পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে আদিতমারী থানা পুলিশের বিরুদ্ধেও।
শুক্রবার রাতে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ধর্ষণের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন ওই স্কুলছাত্রী। এর আগে গত রোববার অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই স্কুলছাত্রীর বাবা।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্র রায় কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার কাঁঠালবাড়ী মীরের বাড়ী এলাকার মৃত মনোরঞ্জন রায়ের ছেলে এবং লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম দৈলজোড় পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত গিরিশ চন্দ্রের জামাতা।
বর্তমানে পুলিশের কনস্টেবল পদে গাইবান্ধা জেলায় কর্মরত অভিযুক্ত বিপুল। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, স্ত্রী ও সন্তানদের দেখার জন্য গত ১০ সেপ্টেম্বর শ্বশুরবাড়িতে আসেন দুই সন্তানের জনক পুলিশ সদস্য বিপুল।
পরদিন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলার সুযোগে রাত ১১টার দিকে শ্বশুরবাড়ির পার্শ্ববর্তী চাচা শ্বশুরের বাড়িতে কৌশলে প্রবেশ করেন তিনি। এ সময় চাচা শ্বশুরের মেয়ে ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বাড়িতে ঘুমাচ্ছিল।
এ অবস্থায় ওড়না দিয়ে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে তাকে ধর্ষণ করেন বিপুল। পরে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মুখের ওড়না খুলে গেলে স্কুলছাত্রী চিৎকার শুরু করলে অনুষ্ঠানে থাকা স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে বিপুলকে আটক করেন।
কিন্তু বিপুলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টিকে মিথ্যা দোষারোপ দাবি করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ সময় ওই স্কুলছাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবার।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বিপুলকে আসামি করে তার শ্যালক ও শ্যালকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে গত রোববার আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন স্কুলছাত্রীর বাবা। কিন্তু অভিযোগ দেয়ার পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশ এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর মা বলেন, ‘বিপুলের শ্বশুররা প্রভাবশালী। বিপুল নিজে পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এ জন্য আসামি গ্রেপ্তার তো দূরের কথা, এখন পর্যন্ত কেউ তদন্ত করতেও আসেনি।’
হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী বলে, ‘দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে আমার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেছে ওই পুলিশ। আমি তার ফাঁসি চাই। বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করব।’ এ বিষয়ে আদিতমারী থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের জন্য অফিসার পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
দেশের খবর