আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিভক্ত দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার তালতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন-সুবিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মান্নান শিকদার, ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা আমির সোহেল মল্লিক, সাবেক ইউপি মেম্বার মনির তালুকদার, মামুন শিকদার ও সুজন মুন্সী। এদের মধ্যে মান্নান শিকদার ও আমির সোহেল মল্লিক বরিশালের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থল থেকে ৪ রাউন্ড গুলিসহ উদ্ধার করা একটি শটগান পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুবিদপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মান্নান শিকদারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরে সোমবার নিজের আইডি থেকে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন স্থানীয় আ’লীগ নেতা আমির সোহেল মল্লিক। মঙ্গলবার বিকেলে আমির সোহেল মল্লিক তার সমর্থকদের নিয়ে তালতলা বাজারের বিভিন্ন স্থানে মহড়া দিচ্ছিলেন। এসময় তার হাতে লাইসেন্স করা একটি শটগান ছিল। খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা এসে বাধা প্রদানের চেষ্টা করলে উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়। সংঘর্ষের সময় নেতাকর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মান্নান শিকদারের অভিযোগ করেন, আমির সোহেল মল্লিক দলবল নিয়ে তালতলা বাজারে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শিকদার ট্রেডার্সে হামলা চালায়। তাকে হত্যা করার জন্য শটগান কপালে ঠেকিয়ে গুলি করতে উদ্ধত হন সোহেল মল্লিক। এসময় এলাকাবাসী প্রতিরোধ করলে তিনি বেচে যান। অপরদিকে আ’লীগ নেতা আমির সোহেল মল্লিক অভিযোগ করেন, তালতলা বাজারে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়া অবস্থায় তাকে চেয়ারম্যান গ্রুপের লোকজন শিকদার টেডার্সের তুলে নিয়ে যায়। এরপর শাটার বন্ধ করে চোখ বেধে মারধর করে তাকে দোকানের ভেতরে আটকে রাখে চেয়ারম্যানের লোকজন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যানের বিপক্ষে প্রার্থী হওয়ায় তাকে সহ্য করতে পারেন না স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. মান্নান শিকদার। এ কারণে এলাকায় আসলেই তার ওপর হামলা চালায় চেয়ারম্যানের ক্যাডাররা।
নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল হালিম তালুকদার বলেন, আমির সোহেল মল্লিকের কাছে পাওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটির (শটগান) লাইসেন্স রয়েছে। গুলিসহ অস্ত্রটি পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ঘটনার পর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি আরও বলেন, কোন পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিরোনামঝালকাঠির খবর