বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৭:১৯ অপরাহ্ণ, ০৪ নভেম্বর ২০১৬
ইলিশ রক্ষায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে বরগুনায় সফলভাবে শেষ হয়েছে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এ সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারের অপরাধে ৩১ জেলেকে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মৎস্য কর্মকর্তাদের যথাযথ তদারকিতে জেলেদের খুব একটা নদীতে দেখা যায়নি।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ১০৯টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩১জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা, ৭১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা মূল্যের ৩ লাখ ২৫ হাজার মিটার জাল ও ৩৯৫ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ২৬টি মামলা ও ১ লাখ ৯৬০ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময় ১৫৭টি অভিযান, ১৪৮টি সচেতনতা সভা, ৭২টি অবতরণ কেন্দ্র, ৩১২টি মাছঘাট, ৬১২টি আড়ৎ, ৫৭৬টি বাজার পরিদর্শন করেন কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে ৮০টি বরফ ক্যান বিনষ্ট করা হয়।
বরগুনা জেলা ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মন্নান মিয়া বলেন, ‘আমার গত বছর নিষেধাজ্ঞা মানায় এ বছর বিগত কয়েক বছরের চেয়ে বেশি ইলিশ পেয়েছি। তাই আমার জেলেরা সবাই মিলে এ বছর এই ২২দিন অবরোধকে স্বাগত জানিয়েছি এবং তা পালন করেছি।’
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ট্রলার মালিক ও জেলেরা সবাই মিলে পালন করেছে। আমরা আশাকরি সরকারের এই উদ্যোগের মাধ্যমে ইলিশ মাছ বৃদ্ধি পেলে জেলে ও ট্রলার মালিকরা আগামী দিনে আরও মৎস্য আহরণ করতে পারবে এবং বিদেশে রফতানি করতে পারবে।
মৎস্য কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, বরগুনা জেলায় নিবন্ধিত ৪ হাজার ৩১১ জেলে থাকলেও ৩৪ হাজার ২১১ জেলে পাচ্ছে সরকারি সহায়তার ২০ কেজি করে চাল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রকৃত জেলেদের পাশাপাশি জেলেদের চালের তালিকায় নাম রয়েছে কৃষক, গাড়ি চালকের নামও। জেলে প্রতি ২০ কেজি বরাদ্দ থাকলেও পাচ্ছে ১৬ কেজি করে।
নবীজির দোয়া নামে ফিশিং ট্রলারের জেলে মো. জালাল মৃধা বলেন, ‘আমার জেলে কার্ড থাকলেও সরকারের দেওয়া এই সহায়তা পাইনি। চাল পেয়েছে যারা জেলে নয়। যারা সাগরে বা নদীতে মাছ শিকারে যায়নি তারা।’
বলিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শাহনেওয়াজ বলেন, ‘শতভাগ জেলেদের নাম দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে জেলেদের নাম দেওয়ার ব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বার কাজ করেন। যদি কোনও প্রকৃত জেলে চাল না পেয়ে থাকে এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রকৃত জেলেদের চাল দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. ওয়াহিদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকারের দেওয়া এই নিষেধাজ্ঞা বরগুনার জেলেরা সঠিকভাবে পালন করেছে। তবে নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিকে দু একটি স্থানে জেলেরা মাছ ধরার চেষ্টা করলে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা ও বিভিন্ন সময় জাল জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশাসন, ট্রলার মালিক সমিতি, জেলে সমিতিসহ সবার সহযোগিতায় এই নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
চাল দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনও হাত নেই। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নাম ও চাল বিতরণ করা হয়।