বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৪:০৫ অপরাহ্ণ, ২৭ অক্টোবর ২০১৬
ইলিশের প্রজনন মৌসুমের কারণে সরকার ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্য়ন্ত ২২ দিন সারা দেশের নদ নদীতে ইলিশ ধরা মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভোলার মেঘনা তেতুলিয়ায় কিছু জেলে ইলিশ ধরছে। এর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন কয়েকজন মৎস ব্যবসায়ী। এ চক্র নিষিদ্ধ সময় ইলিশ ধরায় শিশুদের ব্যবহার করছে।
অন্যদিকে মৎস বিভাগ, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সেখানে অভিযানে নেমে আটক করছে জেলেদের ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে সাজা দেয়া হচ্ছে। জেলেরা বলছে সরকারি সাহায্য না পাওয়ায় পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে তারা নিষিদ্ধ সময় জেল-জরিমানা মাথায় নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নামছে।
জেলায় মৎস বিভাগের হিসাব মতে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা এক লাখ বিশ হাজার। বাস্তবে প্রায় দুই লাখ। ২২ দিন নিষিদ্ধ সময়ে ভিজিএফের ২০ কেজি করে চালের জন্য তালিকাভুক্ত ৮৮ হাজার ১১১ জন জেলে। ২২ দিনের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও তালিকাভুক্তদের অনেকেই এখন পর্যন্ত এ চাল পাননি। তাই জেলেদের ভাষ্য অনুযায়ী পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে তারা নিষিদ্ধ সময় জেল জরিমানা মাথায় নিয়ে এভাবে ভোলার মেঘনা তেতুলিয়া নদীতে মাছ ধরতে নামছে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যেসব জেলের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে তাদেরকে জেলে হিসেবে নিবন্ধন করা হয়। ভোলায় ১৮ বছরের নিচে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নেই এমন জেলের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার।
জেলা মৎস কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘ভোলা জেলায় বর্তমানে এক লাখ ২০ হাজার নিবন্ধিত জেলে আছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালের তালিকা অনুযায়ী ৮৮ হাজার ১১১ জন জেলেকে ভিজিএফের ২০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, মন্ত্রণালয়ে ভোলার এক লাখ ১৭ হাজার জেলের তালিকা দেয়া আছে। সরকার ২০১৪ সালের তালিকাই এখন পর্যন্ত চালু রেখেছে।’
তিনি আরো জানান, ১৫ দিনে জেলায় প্রায় দুই শ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় এক শ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্তত দুই লাখ মিটার জাল পুড়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নিষিদ্ধ সময় নদীতে ইলিশ ধরতে নামার পিছনে রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন কিছু মৎস্য ব্যবসায়ীর হাত রয়েছে। যারা এই অবৈধ মৎস আহরণে শিশু জেলে নিয়োজিত করছে। কোস্টগার্ড অভিযানে আটক জেলেদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন শিশু ছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব শিশু জেলেদের কোন সাজা দিতে পারেনি।