পটুয়াখালীতে খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে শিশু শিক্ষার্থীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ‘আমরা বহুতল ভবন চাই না, আমরা খেলার মাঠ চাই’। ‘হোক প্রতিবাদ-বিদ্যালয়ের জমি বিদ্যালয়েরই থাক’— এভাবে শত শত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে খেলার মাঠ রক্ষার দাবি জানায় কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী।
পটুয়াখালী জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষার্থীরা রোববার সকাল ১০ থেকে দুপুর পর্যন্ত খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে এমন আন্দোলন করে। এসময় শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানের প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করতে চাইলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে তারা। পরে পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করতে সক্ষম হন।
এদিকে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে শিক্ষকরা স্কুলের মুল গেট খুলে দিলে সড়কে বের হয়ে বিক্ষোভ করে তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র ও শিক্ষার্থীরা জানায়, ১০৩ বছর পূর্বে অর্থাৎ ১৯১৯ সালে পটুয়াখালী জেলা শহরে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানে ৪৫ জন শিক্ষক ও ১ হাজার ৬৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুযায়ী জায়গা যথেষ্ট অপ্রতুল। অথচ স্কুলের খেলার মাঠে জেলা প্রশাসন বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, যার প্রতিবাদের আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। কিন্তু শিক্ষকরা মূল গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়ায় আমরা স্কুলের ভেতরে আন্দোলন করতে বাধ্য হই।
এ সময় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্য সুইটি বেগম, নাজমুন্নাহার শিমুল, সেলিনা আক্তার, রাশিদা মনি, নুসরাত তিশা বলেন, পটুয়াখালী জেলার কোটি প্রাণের স্পন্দন পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
শত বর্ষের ইতিহাস ঐতিহ্য বহিত এ বিদ্যাপীঠে জড়িয়ে রয়েছে শিশু,শৈশব ও কৈশোর। অবিকল মায়ের মমতায় শিক্ষার আলো নিয়ে এ প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি হয়েছে দেশ গড়ার লাখো কারিগর। বর্তমান সরকার যেখানে খেলা ও শারীরিক চর্চায় গুরুত্ব দিচ্ছে, সেখানে খেলার মাঠে বহুতল ভবন নির্মাণ অযৌক্তিক। জেলা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলার একমাত্র নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এখানে ১ হাজার ৬৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সামনে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়বে, তখন স্কুলে কক্ষ সংকট দেখা দেবে। তখন জমি ও জায়গার প্রয়োজন হলেও ভবন অপসারণ অথবা ভেঙে জমি উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। তাই জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করবো মানবিক দিকে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।
এ প্রসঙ্গে মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ভুল বোঝাবুঝি ও অপব্যাখ্যার কারণে শিশু শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে, যা আমাদের কাম্য নয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, মূলত ওই জমি জেলা প্রশাসনের।
১৯৮৫ সালে উক্ত জমি তৎকালীন জেলা প্রশাসকের মৌখিক অনুমতিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করে আসছে। তাছাড়া উল্লেখিত স্থানে ২.২০ শতাংশ জমি থেকে ৭৫ শতাংশ জমি। স্বেচ্ছায় স্কুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে এছাড়াও ৬ ফুটের প্রশস্ত সড়ক ১২ ফুটে উন্নীত করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। একটি মহলের উস্কানিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে; যা অযৌক্তিক।
পটুয়াখালি, বিভাগের খবর