বাবুগঞ্জ: বাবুগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-২’এর কাঠের খুঁটি কেটে নিজের নির্বাচনী কয়েক হাজার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড তৈরি করেছেন শ্রমিক নেতা এক ইউপি মেম্বার। আসন্ন বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী হয়ে বরিশাল ও এর আশেপাশের কয়েক জেলার প্রায় প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডেই সাঁটিয়েছেন কয়েক হাজার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড। সরকারি সম্পদ নষ্ট করে প্রচারণার এমন ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনেরও অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, আসন্ন বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী হন উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ সেন্টু কাজী। ওই নির্বাচনের প্রচারণা হিসেবে তিনি পোস্টারের পাশাপাশি নির্মাণ করেন কয়েক হাজার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড। তিনি বরিশালের প্রায় প্রতিটি বাসস্ট্যান্ড ছাড়াও দক্ষিণে কুয়াকাটা, উত্তরে ভুরঘাটা-মাদারীপুর, উত্তর-পশ্চিমে আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট, পশ্চিমে সরূপকাঠি-বানারীপাড়া এবং পূর্বে হিজলা-মুলাদীর বিভিন্ন স্টেশনে একাধিক ফেস্টুন আর বিলবোর্ড সাঁটিয়ে দেন।
তবে এসব ফেস্টুন আর বিলবোর্ডের কাঠামো নির্মাণে তিনি ব্যবহার করেছেন পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২’এর কাঠের খুঁটি। বিদ্যুতের কাঠের খুঁটি তিনি স্ব-মিলে প্রয়োজনীয় সাইজ মতো চিরে প্রতাবপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে বসে নির্মাণ করেছেন এসব ফেস্টুন আর বিলবোর্ড বলে জানা গেছে। তিনি বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২’এর একজন তালিকাভুক্ত ঠিকাদার ও লেবার সর্দার হওয়ার সুবাদেই পেয়েছেন এমন সুযোগ। এতে একদিকে যেমন তিনি সরকারি সম্পদ নষ্ট করেছেন তেমনি নির্বাচনী আচরণবিধিও লংঘন করেছেন বলে অভিযোগ তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। এ ব্যাপারে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ও প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তারা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মাধবপাশা ইউপি সদস্য মোঃ সেন্টু খান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তিনি বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ থেকে সংস্থার কিছু পরিত্যাক্ত ও নষ্ট হয়ে যাওয়া খুঁটি নিলামে ক্রয় করেন।
এগুলো মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় কিছু খুঁটি কিনে তিনি গাছের সাথে তার নির্বাচনী ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের ফ্রেম তৈরির কাজে ব্যবহার করেন। এসব অভিযোগকে তিনি শত্রুপক্ষের অপপ্রচার দাবি করে সাংবাদিকদের কাছে আরো বলেন, যেসব স্টেশনে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের বাস চলাচল করছে কেবলমাত্র সেসব স্টেশনেই এসব ফেস্টুন আর বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। এসব অভিযোগ নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী এবং তার শত্রুপক্ষের যৌথ ষড়যন্ত্র বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ব্যাপারে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২’এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী হেম চন্দ্র বৈদ্য জানান, পল্লী বিদ্যুত সমিতির খুঁটি কেটে ফেস্টুন বা বিলবোর্ড তৈরির এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার জানা নেই। আগে বিদ্যুত লাইনে কিছু কাঠের খুঁটি ব্যবহার করা হলেও সেগুলো একসময় পানিতে পঁচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন সেগুলো পরিবর্তন করে উন্নত পাথর ঢালাইয়ের এসপিসি পোল ব্যবহার করা হচ্ছে।
নিয়মানুসারে পুরানো এসব নষ্ট বা পরিত্যাক্ত খুঁটিও পল্লী বিদ্যুতের সম্পত্তি। অভিযুক্ত ব্যক্তি এসব খুঁটি পূর্বে নিলামে কিনেছিলেন কিনা সেটা আমার জানা নেই। বিমানবন্দর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, খুঁটিগুলো পল্লী বিদ্যুতের সম্পত্তি। তাই তাদের অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত সেন্টু কাজী বিএনপির হরতালে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী। তবে ওই মামলায় তিনি আদালতের জামিনে রয়েছেন।’
বরিশালের খবর