৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

পায়ে হেঁটে দম্পতির টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ভ্রমণ

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২:০০ অপরাহ্ণ, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পায়ে হেঁটে দম্পতির টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ভ্রমণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: প্রতিটি প্রাণ মূল্যবান, আত্মহত্যা নয় বাঁচতে শিখি- এমন লক্ষ্য নিয়ে পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ভ্রমণ করলেন শারাবান তহুরা শান্তা ও আল ইমরান শাওন নামের এক দম্পতি। ৯২৭ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে শনিবার দুপুরে বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে ভ্রমণ শেষ করেন তারা।

ঐ দম্পতি বলেন, গত ২৭ জুন আমরা টেকনাফ থানায় চিঠি দিয়ে চলে যাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে। পরের দিন ২৮ জুন থেকেই শুরু করি পায়ে হেঁটে ভ্রমণ। প্রথম দিন শাহপরীর দ্বীপ থেকে বড়ডিল পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার হাঁটি। সেখানে থাকার জায়গা না পাওয়ায় মরিসবুনিয়া নামের একটি স্কুলের নৈশ প্রহরীর বাড়িতে রাতযাপন করি। সেই রাতে পাহাড়ি হাতি আমাদের থাকা স্থানসহ আশেপাশে জায়গায় আক্রমণ করে। আমরা গভীর রাতে সবাই দৌড়াদৌড়ি করে স্কুলের পাকা বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নেই।

পরের দিন ছিল ঈদের দিন। আমরা ঈদের দিন ৩৬ কিলোমিটার হেঁটে বড়ডিল মরিশবুনিয়া স্কুল থেকে ইনানি বিচ পর্যন্ত আসি। এ সময়টাতে আমরা পুরোটা পথ মেরিন ড্রাইভের অস্বাভাবিক রোধ আর সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আসি। ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে ১০ দিনে ৪০০ কিলোমিটার একবারে হাঁটি।

এরপর অফিসের ব্যস্ততা, মায়ের অসুস্থতা ও পারিবারিক কিছু কারণে কয়েক সপ্তাহর পর আবারো সপ্তাহের ছুটির দিতে শুরু করি হাঁটা। এভাবে আমরা নীলফামারী রেলস্টেশন পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে উত্তরের সীমান্ত তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত পৌছে ভ্রমণ শেষ করি।

জানা যায়, শারাবান তহুরা শান্তা পেশায় একজন ব্যাংকার। রাজধানী ট্রাস্ট ব্যাংক ঢাকার খাজা গরিবে নেওয়াজ শাখার জুনিয়র হিসেবে কাজ করছেন। অপরদিকে তার স্বামী আল ইমরান শাওন একজন আর্কিটেক্ট। মন্ডল গ্রুপ অব কোম্পানিতে আর্কিটেক্ট হিসেবে জব করছেন।

চাকরি ফাঁকে ছুটির সময়গুলো ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গাগুলোতে। তারা আন অফিশিয়ালি বাংলাদেশের ১ম সর্বোচ্চ চূড়া সাকা হাফং, ২য় সর্বোচ্চ জোতলাং, ৪র্থ সর্বোচ্চ জোগী হাফং, তাজিংডন, কেওক্রাডং ও বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলার প্রচুর পরিমাণে ঝর্ণা ঘুরেছেন।

পায়ে হেঁটে ভ্রমণের বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তা বলেন, কিশোর-কিশোরীদের অনাকাঙ্খিত আত্মহত্যার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে আমাদের এ ইভেন্ট জার্নি ছিল। আমরা পথে পথে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। এর মধ্য দিয়েই নিজের দেশকে খুব কাছ থেকে দেখতে পায়ে হেঁটে পথ পাড়ি দিলাম টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া।

আউটডোর বিডির ফাউন্ডার জুয়েল রানা বলেন, আমি ঘুরতে ভীষণ পছন্দ করি। আমরা তো অনেকভাবে ঘুরাঘুরি করতে পারি। গাড়িতে, বিমানসহ নানাভাবে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি স্বনির্ভরভাবে ঘুরাঘুরি করতে। সে পরিকল্পনা করেই আমি আউটডোর বিডি নামে প্রতিষ্ঠান খুলেছি। ঘুরাঘুরির জন্য যেসব প্রয়োজন হয় তা আমরা প্রভাইট করি।

তিনি আরো বলেন, যখন জানলাম শান্তা ও শাওন পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ভ্রমণ করবেন। আমরা চেষ্টা করেছি তাদের এ ভ্রমণকে সাপোর্ট দিতে। আমি হয়তো পায়ে হেঁটে তেঁতুলিয়ায় আসিনি, তবে আমি তাদের পাশে সার্বক্ষণিক সাপোর্টে ছিলাম। যাদের এরকম ঘুরাঘুরির স্বপ্ন রয়েছে, আমরা আউটডোর বিডি থেকে তাদের উৎসাহিত করি সে ভ্রমণকে সাকসেস করতে।

71 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন