৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

পায়রা বন্দর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মহাপরিকল্পনা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩৪ অপরাহ্ণ, ১৩ আগস্ট ২০১৬

দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পটুয়াখালীর পায়রায় অপারেশনাল কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল দক্ষিণাঞ্চল নয়, গোটা দেশের উন্নযনে এই বন্দর কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরই পদ্মাসেতুর নির্মাণে পাথর নিয়ে চীন থেকে আসা জাহাজ এমভি ফরচুন বার্ড থেকে পণ্য খালাস করতে বহির্নোঙ্গরের উদ্দেশ্যে পায়রা থেকে রওয়ানা দেয় লাইটারেজ জাহাজ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর হিসেবে পায়রা বন্দরের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন। এর আড়াই বছরের কিছু সময় পর বন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে তৈরি হচ্ছে কনটেইনার, বাল্ক, সাধারণ কার্গো, এলএনজি, পেট্রোলিয়াম ও যাত্রী টার্মিনাল। সে সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চল, তৈরি পোশাক, ওষুধশিল্প, সিমেন্ট, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, সার কারখানা, তেল শোধনাগার ও জাহাজ নির্মাণশিল্পসহ আরও অনেক শিল্পকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ হলে গ্যাসের মাধ্যমে এখানেই সার কারখানা চালু করা সম্ভব হবে। ইপিজেড, এসইজেড, জাহাজ নির্মাণ এবং মেরামত খাতে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। ২০২৩ সালে পায়রা বন্দরের পুরো কাজ সম্পন্ন হবে।

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী যখন এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন, তখন পটুয়াখালীর বন্দর এলাকায় হাজারো মানুষ সেখান থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। স্থানীয় বিভিন্ন দাবি-দাওয়াও এ সময় তুলে ধরেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানও দেন প্রধানমন্ত্রী।

পটুয়াখালী থেকে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পায়রা বন্দর এর একটি।

বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর এই বন্দর যাত্রা শুরু করেছিল। আড়াই বছরের মধ্যে প্রথম বিদেশি জাহাজ এসেছে বহির্নোঙ্গরে। এটা এক বিরাট সাফল্য।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চল সব সময় ছিল অবহেলিত। কিন্তু এখানে বিশাল সম্ভাবনা আছে। বিভিন্ন সময় এই অঞ্চল সফর করতে এসে এই সম্ভবনা আমি দেখেছি। আর এ কারণেই এই এলাকায় এই বন্দর করার সিদ্ধান্ত নেই।’

কেবল সমুদ্র বন্দর নয়, এই অঞ্চলের ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এখানে একটি নৌ ঘাঁটি হচ্ছে, সেনানিবাসও নির্মাণ হচ্ছে। আরও নানা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পায়রা ভবিষ্যতে গভীর সমুদ্রবন্দর হবে। এটা হবে একটি অর্থনৈতিক কর্মচঞ্চল এলাকা। পাশাপাশি এখানে জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ মেরামত কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। সড়ক যোগাযোগ এরই মধ্যে উন্নত হয়েছে। আগামীতে পায়রা পর্য‌ন্ত রেল নিয়ে আসা হবে। নদীগুলো ড্রেজিং করে ব্রহ্মপুত্র পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। এখান থেকে আসামের করিমগঞ্জ পর্যন্ত নৌপথ চালু করা হবে।’

অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক চেয়েছিলেন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে। কিন্তু ঘাতকরা সেটা চাইতো না বলে তাকে হত্যা করেছে। কিন্তু আমরা ঘাতকদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে দেবো না। জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। কেবল দক্ষিণাঞ্চল নয়, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষই উন্নয়নের সুফল পাবে।

23 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন