সেদিন যখন গ্রেনেড হামলা শুরু হয়, তখন লাফ দিয়ে মঞ্চে উঠে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে আড়াল করে দাঁড়ান তিনি। প্রিয় নেত্রীকে বাঁচাতে পারলেও নিজে প্রাণ হারান বরিশালের মুলাদী উপজেলার রামারপোল গ্রামের মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু। তিনি তখন ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন ২৪ জন নেতাকর্মী। আহত হন শতাধিক।
শহীদ সেন্টু স্মৃতি সংঘের সভাপতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রাজিব হোসেন ভূঁইয়া রাজু সেদিনের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রাজিব হোসেন বলেন, “সমাবেশ চলাকালে সেন্টু ভাই ও আমি মঞ্চের সামনে বসা ছিলাম। হঠাৎ করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। মানুষ দিগি¦দিক ছোটাছুটি শুরু করে। সেন্টু ভাই প্রিয় নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) রক্ষা করতে একলাফে মঞ্চে উঠে অন্যদের সঙ্গে নেত্রীকে আড়াল করে রাখেন। একপর্যায়ে আমি দৌড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ঘটনাস্থল এসে দেখি সেন্টু ভাই রক্তাক্ত, নিথর পড়ে আছেন।”
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও মুলাদী উপজেলার রামারপোল গ্রামের মরহুম আফসার উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু তার রাজনৈতিক জীবনে কখনোই নিজের কথা ভাবেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেম, মাটি ও মানুষের সঙ্গে গভীর মমতার ছাপ ছিল তার মাঝে। গ্রেনেড হামলা থেকে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার জীবন বাঁচাতে গিয়ে সেন্টু মাত্র ৩৬ বছর বয়সে জীবন উৎসর্গ করেন।
একুশ আগস্টের হামলাকারী ও পরিকল্পনাকারীদের অনতিবিলম্বে বিচারের দাবিতে ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় রবিবার সকালে মুলাদীর রামারপোল শহীদ সেন্টু স্মৃতি সংঘের উদ্যোগে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
বরিশালের খবর