বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৮:৪০ অপরাহ্ণ, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ফাল্গুনের প্রথম দিনে বিদ্যা দেবীর আরাধনা, প্রতিমা সাজাতে ব্যস্ত শিল্পীরা
পলাশ দত্ত, আগৈলঝাড়া থেকে :: বিদ্যা ও নৃত্য কলার দেবী সরস্বতী পুজা ১লা ফাল্গুন, ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার। অন্যান্য বছরের মতো মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বীনা পানি অর্চণা বা সরস্বতী পুজা। পুজা উপলক্ষে সরস্বতীর প্রতীমায় রঙ তুলির আঁচড় দিতে এখন মহাব্যস্ত সময় পার করছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর শিহিপাশা গ্রামের পাল পাড়ার মৃৎশিল্পীরা। আর মাত্র দুই দিন পরে জ্ঞানের আলো ছড়াতে অনুষ্ঠিত হবে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর পুজা। তাই শেষ সময়ে প্রতীমায় রংযের কাজ শেস করতে মৃৎশিল্পীদেরও পাশাপাশি তাদের বাড়ির নারী শিল্পীদেরও বিশ্রামের সময় নেই।
জানা গেছে, দিন-রাত সমান তালে প্রতীমা তৈরীতে এখন ব্যস্ত তারা, ব্যস্ততার কমতি নেই পুরুষ শিল্পীদের পাশাপাশি তাদের স্ত্রী নারী শিল্পীদেরও। খড়, কাঠ, বাঁশ ও মাটি দিয়ে তৈরি প্রতীমা রোদে শুকিয়ে এখন দেয়া রঙ তুলির আঁচড়। দেবীর গায়ে পরানো হচ্ছে বিভিন্ন অলঙ্কার পরানোর কাজ।
উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা পাল পাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পী শিবু পাল, তার স্ত্রী মায়া রাণী পাল, একই বাড়ির জয়দেব পাল এবং তার স্ত্রী সবিতা রানী পাল, গৌরাঙ্গ পালের স্ত্রী মঞ্জু রানী পাল, উপেন পালের স্ত্রী আরতী রানী পাল, প্রমানন্দ পালের স্ত্রী মিনতী রানী পাল জানান, সারা বছরই বিভিন্ন পুজার জন্য দেব দেবীর প্রতীমা তারা বাড়িতে তৈরি করে থাকেন। বাড়িতে বসেই রংয়ের কাজও করেন তারা। আবার অর্ডার অনুযায়ি ক্রেতার বাড়িতে গিয়েও বড় আকারের প্রতীমা তৈরী করে থাকেন তাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। বিভিন্ন মাসে বিভিন্ন পুজার মৌসুম অনুযায়ী তারা প্রতীমা তৈরী করেন। বর্তমানে সরস্বতী প্রতীমাই তৈরী করছেন তারা। তাদের নির্মিত প্রতীমা উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে বিক্রি করেন তাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। পাইকাররাও বাড়ি থেকে প্রতীমা কিনে নিয়ে যায় বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রির জন্য।
শিল্পীরা আরও বলেন, দু’রকমের প্রতীমা তৈরী করেন। ছাঁচে (ডাইস) নির্মিত ও ব্যানায় নির্মিত প্রতীমা। ছাঁচে নির্মিত প্রতীমা ২শ টাকা থেকে শুরু করে ব্যানায় নির্মিত প্রতীমা ১হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি বিক্রি করে আসছেন তারা। বিক্রির উদ্যেশ্যে অন্তত ছাঁচে ৩ হাজার এবং ব্যানায় তৈরী ২হাজার প্রতীমা তৈরি করেছেন তারা। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের পছন্দ মতো প্রতীমার নির্মাণের অর্ডার দিয়েছেন। ওই প্রতীমার কাজও শেষ করে তা ডেলিভারী দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। পুরুষ শিল্পীদের সাথে নারী শিল্পীরাও কাজ করছেন দু’হাতে সমান তালে।
পঞ্জিকা মতে, ১৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮.৪২মিনিটে পঞ্চমী তিথি শুরু হয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি বুুধবার এই তিথি থাকবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৩মিনিট পর্যন্ত। তাই আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল পঞ্চমী তিথিতে প্রতিটি হিন্দু বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরস্বতী পুজা অনুষ্ঠিত হবে।’