বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৪:৫৭ অপরাহ্ণ, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯
বার্তা প্রতিবেদক, বরগুনা:: ‘এক খেয়েছে বুলবুলেতে এহন আবার অসময় বইষায় মোগো পাকা ধানে মই দিয়া গেল। কয়েকটা এনজিও থেকে ঋণ নিয়া, ধারদেনা কইররা জমি চাষ করি। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে মোগো বেশ কিছু জমির আমন ধানের ক্ষতি হয়। মোরা এহন কিস্তি বা দিমু ক্যামনে আর ধারদেনা দিমু ক্যামনে।’
কথাগুলো হতাশ হয়ে বলছিলেন বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক পনু হাওলাদার। তিনি শুক্রবার সকালে তার মাঠের আমন ধানগুলো পরে যাওয়ায় হতাশ হয়ে কেঁদে ফেলেন।
গত ৯ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে বিষখালী নদীর তীরবর্তী বেতাগী উপজেলায় আমন ধান ও রবি ফসল খেতের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এতে কৃষকের কোমর ভেঙে গেছে ও ফসল কম হওয়ার আশঙ্কায় কৃষক চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রোপা আমন আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৭০২ হেক্টর,যার ২.৩৮ শতাংশ বিনষ্ট হয়েছে। ধনিয়া ৩ হেক্টরের ক্ষতি ৮০ শতাংশ, মরিচ ০.৫ হেক্টরের ৮০ শতাংশ,শীতকালীন শাক-সবজি ১২০ হেক্টরের ৬১.২৫ শতাংশ, আখ ৫ হেক্টরের ২৪ শতাংশ,খেশারি ৫ শত হেক্টরের ৮০ শতাংশ, পান ১৪০ হেক্টরের ১৩.৫০ শতাংশ ও কলা ৫০ হেক্টরের ২০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।
উত্তর ছোট মোকামিয়া গ্রামের কৃষক মো. মধু মিয়া জানান, ৫৫ একর জমিতে মৌলতা, দুধ কলম, কালিজিরা ও দেশীয় ধান জাতের আবাদ করেছিলাম। এখন অসময়ের বৃষ্টিতে মাঠে ধানগুলো পড়ে গেছে এবং এ ফসল ঘরে না তোলার উপক্রম হয়েছে।
সদর ইউনিয়নের ঝিলবুনিয়া গ্রামের কৃষক মো. জামাল মোল্লা বলেন, ঘূর্ণিঝড় তাদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। তিনি ৭ শতাংশ জমিতে বেগুন, করলা, ধনিয়া ও মরিচের বীজ বুনেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে প্রর্বল বর্ষণে মাঠের ধান নুয়ে পড়েছে।
হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিশা গ্রামের কৃষানী মোসা. রেহেনা বেগম বলেন, মাঠের ধান পেকে গেছে। আর এক সপ্তাহের মধ্যে কেটে ঘরে তোলা যেত। কিন্তু বর্ষণের কারণে ধানগুলো মাঠে শুয়ে পড়েছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলন তো দূরের কথা পুরো ধান বাড়িতে তুলতে পারবো না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে ধানগুলো নুয়ে পড়েছে এটা সত্য। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।