সরকারি চাকরিজীবীকে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ও তার ছোট ভাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান তনুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে বরগুনার তালতলী থানায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবী মাহমুদুল হাসান পিন্টু বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তাৎক্ষনিকভাবে মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি আলাল ও বেল্লালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মূল আসামি উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ও চেয়ারম্যানের ভাই ছোট বগি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান তনুসহ বাকি আসামিদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি।
মাহমুদুল হাসান পিন্টুর দায়েরকৃত মামলায় জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমিতে অবৈধভাবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ৪টি ঘর নির্মাণ শুরু করেন। তার মধ্যে আবু বকর নামের এক ব্যক্তির নিকট থেকে ৪ লক্ষ টাকা নিয়ে একটি ঘর বরাদ্দ দেন। সেখানে বর্তমানে হোটেল রয়েছে। বাকী ৩টি ঘর নির্মাণ ও বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ৪ লাখ করে টাকা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
তখন মাহমুদুল হাসান পিন্টু সেখানে ঘর নির্মাণে বাধা দেয়। এ ঘটনার পর পিন্টুকে ষড়যন্ত্র করে তালতলী থেকে বরিশাল মেহেন্দীগঞ্জে বদলী করে দেওয়া হয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ঘর তুলতে না পেরে পরবর্তীতে পিন্টুর কাছে ৩টি দোকান ঘর বাবদ ১২ লাখ টাকা দাবি করে এবং বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়। এরপর মাহমুদুল হাসান পিন্টু ছুটিতে তালতলী গেলে গত ২৫ ডিসেম্বর ১৭ইং তারিখ বিকেল ৫টার দিকে তাকে মিন্টু তার ভাই তারেক ও তনুসহ দলবল নিয়ে পিন্টুকে পিটিয়ে দুই পা এবং এক হাত ভেঙে দেয়।
মারধর ও চাঁদাবাজীর ঘটনায় প্রথমে থানায় মামলা না নেওয়ায় মাহমুদুল হাসানের রীট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশ মামলা নেয় এবং ওই রাতেই দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। এ মামলায় ১০ জন আসামি রয়েছে।
পিন্টু জানান, মামলার আসামি মিন্টুর সকল অপকর্মের চিহ্নিত দুই সহযোগী শামীম পাটোয়ারী ও লোকমান হোসেন আকন্দ তালতলী বাজারে জনসম্মুখে ঘোরাফেরা করছে এবং আমাকে বিভিন্ন রকম হুমকী দিচ্ছে।
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত না। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি উল কবির জমাদ্দার বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসীদের দায় দায়িত্ব দল বহন করবে না। সে যদি আইনের চোখে অপরাধী হয় তবে আইন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশে আমরা মামলা নিয়েছি এবং সাথে সাথে দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছি। বাকিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’