বরগুনায় পদ পেতে ৭২ লাখ টাকার বাণিজ্য, আ’লীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরগুনার বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে সামনে রেখে উপজেলার সব ইউনিটের নতুন কমিটি গোছাতে তোড়জোর শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে।
তবে গত ৪ সেপ্টেম্বর বেতাগী সদর ইউনিয়নের আয়োজিত ত্রি- বার্ষিক সম্মেলনে বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বেতাগী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম পিন্টু বিশেষ অতিথির বক্তব্যটি ‘টক অব দ্যা টাউনে’ পরিণত হয়েছে।
সম্মেলন শেষ হওয়ার তিনদিন পর ১৪ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এখন ভাইরাল। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেঠে।
ভিডিও বক্তব্যে আ.লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম পিন্টু অভিযোগ করেন, বিএনপির কালচার এখন আওয়ামী লীগে ঢুকেছে। শুধুমাত্র উপজেলার ৮টি ইউনিটের ৭২ টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ৭২ লাখ টাকার বাণিজ্য হয়েছে।কমিটিতে পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকার বাণিজ্য করেছেন উপজেলার অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলে সঠিক নেতৃত্ব সৃষ্টিতে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায় সম্মেলন করা হয়।নেতা তৈরি করা হয়। কিন্তু এই সুযোগে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা কমিটিতে পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে ৭২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিএনপির আমলনামা নিয়ে সমালোচনা করে এসেছি। আজ কেন আওয়ামী লীগ টাকার কাছে বিক্রি হবে? কেনো বিএনপির কালচার আমাদের মধ্যে আসবে?’
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত থাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এবিএম গোলাম কবিরসহ উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে পিন্টু আরও বলেন, ‘অতি দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করুণ।তা না হলে এমন চলতে থাকলে আগামীতে আওয়ামীলীগের রাজনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।
আমাদের রাজনীতি পিছিয়ে পড়বে এবং একদিন বিএনপির থেকেও দুর্দিন হবে আমাদের। কিছু লোকের স্বার্থ উদ্ধারে স্বাধীনতা বিরোধী লোকদের দলে এনে সব ঘোলাটে করা হয়েছে। নেতাদের বাসায় টাকার খাম আর বড় বড় উপহার আসতেছে এসব বন্ধ করান।
আপনাদের মাধ্যমে আমি বরগুনা -২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। যেন এই ৭২ লাখ টাকা বাণিজ্যের একটা সুষ্ঠু বিচার হয়।’
আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম পিন্টুর বক্তব্যের পর ব্যপকভাবে সমালোচিত বেতাগী উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব। এমন বক্তব্যের কারণ জানতে চাইলে মো. আমিরুল ইসলাম পিন্টু জানান,‘একটি ওয়ার্ডের রাজনীতে করে একজন নেতা কি পায়? সেখানে যদি তার পদ পেতেই লাখ টাকা গুনতে হয়।
আমার বক্তব্যে আমি যা বলার বলে দিয়েছি, আমি প্রমাণ ছাড়া কথা বলি না। এখন যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। আমি প্রমাণ দিয়ে সহায়তা করব।’
পদ বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবির বলেন,‘এমন বক্তব্য শোনার পর থেকে আমি খুব ব্যথিত,মর্মাহত ও লজ্জিত তাই এ ব্যাপারে এখনই কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
সম্মেলনের মাঝে আ.লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম পিন্টু কেনো এমন বক্তব্য রাখলেন এ ব্যাপারে আগে জানব। আর অতি দ্রুত জেলা আ.লীগ ও ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’
বরগুনা, বিভাগের খবর