১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম

বরগুনায় শিক্ষকের পিটুনীতে মাদরাসাছাত্র রক্তাক্ত

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:২১ অপরাহ্ণ, ২০ এপ্রিল ২০১৭

তালতলীর বড় অংকুজান পাড়া কারিমিয়া হাফেজিয়া কমপ্লেক্স মাদরাসার ছাত্রাবাসে থাকতে রাজি না হওয়ায় ওই মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ আল আমিন বুুধবার বিকেলে ৩টায়  ইছা (১৩) নামের এক ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন। খবর পেয়ে ওইদিন রাতে  আহত ইছাকে তার বাবা উদ্ধার করে  তালতলীতে প্রথমিক চিকিসা শেষে বাড়ি নিয়ে গেছেন।

মাদরাসা  ও ইছার পরিবার সূত্রে জানা গেছে- তালতলী উপজেলার লাউপাড়া গ্রামের মো. আউয়াল সিকদারের ছেলে মো: ইছা (১০) চলতি বছর জানুয়ারি মাসে হাফেজি পড়ার জন্য তালতলীর বড় অংকুজান পাড়া কারিমিয়া হাফেজিয়া কমপ্লেক্স মাদরাসায় ভর্তি হয়।

ভর্তির পর ইছা মাদরাসার ছাত্রাবাসে না থেকে বাড়ি থেকে আসা যাওয়া করে ক্লাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন ওই মাদরাসার হাফেজ মো: আল আমিন। মাদরাসা কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবা  খোলা হয়। ওই দিন ইছা মাদরাসায় না গিয়ে বুধবার মাদরাসায় যান। বুধবার সকালের ক্লাশের পর বিকেল ৩টার দিকে হাফেজ আল আমিন ইছাকে ডেকে তার কক্ষে নিয়ে যান এবং মাদরাসায় না আসা এবং না থাকার কারন জিজ্ঞাসা করার এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি পেটাতে থাকেন।

পেটানোর একপর্যায়ে  ইছা মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর চুল ধরে টেনে তুলে আবার পেটাতে থাকেন হাফেজ আল আমিন। এ ভাবে পিটানোর পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরেন ইছা।

এসময়  ইছার এক সহপাটি ওই মাদরাসার ছাত্র ফেরদাউস নামে এক ছাত্র ইছাকে না পেটানোর অনুরোধ করলে তাকেও পেটায় হাফেজ আল আমিন।

ইছা জানায়- মোরে হুজুরে মাইরা থোয় নাই। মুই  রাইতে  কষ্টে ঘুমাইতে পারি নাই।

লাঠির আঘাতে ইছার সমস্ত শরীর ফুলে লাল হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় রক্ত বের হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে তার।

এ অবস্থার খবর পেয়ে ইছার বাবা মো: আউয়াল সিকদার গুরুতর অসুস্থ ছেলে ইছাকে ওই মাদরাসা থেকে রাত সাড়ে ৮ দিকে উদ্ধার করে তালতলীর একটি ফার্মেসিতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিসা করান।

ইছার বাবা আউয়াল সিকদার জানান,  মাদরাসার ছাত্রাবাসে থাকতে না চাওয়ায় তার ছেলেকে হাফেজ আল আমিন বেধরক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। লাঠির আঘাতের ব্যাথায় সারা রাত ঘুমাতে পারেনি ছেলে।

ইছার চাচা মো: আলমগীর হোসেন জানান, মাদরাসার হাফেজ আল আমিন ইছাকে গরু ছাগলের মত মার ধর করেছেন। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

অভিযুক্ত হাফেজ আল আমিন মার ধরের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি সামান্য বেত্রাঘাত করেছি। কেন করেছেন এ প্রশ্নের জবাবে বলেন ইছা মিথ্যা কথা বলে নিয়মিত মাদরাসায় আসে না এবং ছাত্রাবাসে থাকতে চায়  না।

মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা অফজাল হোসেন বলেন, মারধরের খবর পেয়ে ইছাকে তার বাবার মাধ্যমে তালতলী এনে প্রাথমিক চিকিৎসা  দিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছি।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, এ বিষয়ে এখনো কেই অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

18 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন