বরগুনার পাথরঘাটায় ঘৃণার কালিমা মুছতে না মুছতেই আবারও ছাত্রলীগের ৩ নেতার অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে গণধোলাই খেয়েছেন। এলাকাবাসী ওই বখাটেদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করার আগেই ছাত্রলীগের নেতারা ছাড়িয়ে নেয়।
ঘটনাঠি ঘটেছে রোববার রাতে উপজেলার কালমেঘার খান বাড়িতে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতারা হলেন- পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের উপ বিজ্ঞান তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক নাঈম ইসলাম সিজান, উপক্রিড়া সম্পাদক নাঈম ইসলাম এবং অপর ছাত্রলীগের সমর্থক মো. রাব্বি।
এর আগে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হালদারের গ্রামের বাড়ি বামনায় ঈদ পুনঃমিলনী অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে কালমেঘায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ওড়না টেনে নিয়ে যাওয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেন। গত কিছু দিন ধরে ছাত্রলীগের কর্মকান্ডে এলাকাবাসীর পাশাপাশি দলের ভিতরেও নানা জল্পনা কলাপনার সৃষ্টি হয়েছে। একরকমের নিয়ন্ত্রণ ও লাগামহীন হয়ে পড়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রতক্ষদর্শী জানান, রোববার রাতে কালমেঘা ইউনিয়নের মধ্য কালমেঘা গ্রামের খলিল খানের বসতঘরের সামনের রুমে বিদ্যুতের আলোতে অপরিচিত লোক দেখলে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। কিছুক্ষণ পর ৩৫ নম্বর কালমেঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে পিএসসি পরীক্ষার্থীয় অংশগ্রহণকারীকে দেখে দরজা খুলতে বলে এলাকাবাসী।
এ সময় ঘরের মধ্যে অপর একটি কক্ষে কালমেঘা মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রীর সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়া সম্পাদক নাঈম ইসলামকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে। এ সময় ওই তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে স্থানীয়রা পুলিশের কাছে সোপর্দ করার চেষ্টা করলে উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের তদবিরের কারণে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
প্রতিবেশি মো. মনির খান বলেন, নবম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা ও মা ওইদিন কাকচিড়ায় একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যায়। এ সুযোগে বখাটে ছাত্রলীগ নেতারা ঘরে ঢুকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় এলাকাবাসি ধরে ফেলে। ছাত্রলীগের অপর নেতাদের চাপের মুখে আমরা পুলিশের কাছে জানাতে পারিনি।
পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান সোহাগ বলেন- এ রকমের ঘটনা শুনিনি। তবে এরকমের ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে সাংঠনিক ব্যবস্থা নেযা হবে। এর দায় ছাত্রলীগনেবে না।
পাথরঘাটা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা মো. খবীর আহম্মেদ বলেন, এমন ঘটনা সম্পর্কে অবহিত নই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।’
এর আগে চলতি বছরের ১০ আগস্ট পাথরঘাটা কলেজের পশ্চিম পাশের একটি পুকুরের অজ্ঞাত তরুণীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ গুম করার অপরাধে পাথরঘাটা ৪ ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ ঘটনায় পাথরঘাটাসহ গোটা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৪ ছাত্রলীগনেতাকে দল থেকে বহিস্কার করে।
এছাড়া ১১ ডিসে¤¦র দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে পাথরঘাটা উপজেলা ১৩ নেতাকে অব্যহতি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এনিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জরিয়ে পড়ায় পাথরঘাটায় ১৭ ছাত্রলীগ নেতা বহিস্কার করা হয়।’
বরগুনা