বরগুনার আমতলী উপজেলায় বিভিন্ন স্কুলে কোচিং ও উন্নয়ন ফির নামে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা এ অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে- ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠেয় এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পুরণ ৭ নভেম্বর শুরু হয়েছে। শেষ হবে ২৬ নভেম্বর। বোর্ড নির্ধারিত ফি মানবিক বিভাগ ১,৬৩০, বিজ্ঞান ১,৭২০ ও বাণিজ্য ১,৬৩০ টাকা। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা নিজের ইচ্ছামত কোচিং ফি’র নামে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ফির নামে ৫০০ টাকা করে আদায় করছেন। এমন অভিযোগ বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের।
ওদিকে ওই স্কুলগুলোর শিক্ষকরাও জানান, প্রধান শিক্ষকরা নিজেদের ইচ্ছামত কোচিং ফির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। এছাড়া বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিষয় প্রতি ২০০ টাকা অতিরিক্ত নিয়েও ফরম পূরণ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার তারিকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোচিং ফি ৩,০০০ টাকা ও উন্নয়ন ফি ৫০০ টাকা মিলে ফরম পূরণে ৪,৫০০ টাকা থেকে ৬,০০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় আদায় করছে কোচিং ফিসহ ২,৭৫০ টাকা থেকে ৩,৫০০ টাকা।
সাবেক ইউপি সদস্য আবদুর রাজ্জাক মিয়া জানান, তারিকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোচিং ও উন্নয়ন ফিসহ আমার দুই নাতি-নাতনির জন্য যথাক্রমে ৫,৪০০ ও ৬,০০০ টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করেছি। বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের নামে উন্নয়ন ফি বাবদ ৫০০ টাকা আদায় করছেন প্রধান শিক্ষক।
তারিকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র নাঈমের বাবা আবু হানিফ হাওলাদার জানান, আমার ছেলের ফরম পূরণে কোচিং ও উন্নয়ন ফিসহ ৩,২০০ টাকা দিয়েছি। তিনি বলেন, ওই বিদ্যালয়ে ৬,০০০ টাকা দিয়েও ফরম পূরণ করতে হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক কারো কথা শুনছেন না।
তারিকাটা মাধমিক বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুস মিয়া শিক্ষকদের মতামত উপেক্ষা করে কোচিং ফির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।
গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান শিকদার দুই মাসের কোচিং ফি বাবদ এক হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বোর্ড নির্ধারিত ফি দিয়ে ফরম পূরণ করেছি। অতিরিক্ত কোন টাকা আদায় করা হয়নি।
তারিকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউনুস মিয়া অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, কোচিং করবে শিক্ষকরা তারা কোচিং করতে টাকা না নিলে আমি কেন নেব? তিনি আরো বলেন, উন্নয়ন ফি’র নামে কোন টাকা আদায় করা হচ্ছে না। বিদ্যালয়ের টাকা দিয়ে মাঠ ভরাট করা হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আকমল হোসেন বলেন, ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।