বিয়ে হতে না হতেই বিচ্ছেদ, অতপর মামলা। সবশেষে পুলিশের উদ্যোগেই সমাধান। আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হল আবার। বিয়েতে কনে পক্ষের হয়ে অতিথি হলেন বরগুনার জেলা প্রশাসক ড. মহা. বশিরুল আলম। আর বরপক্ষের অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার নিজেই। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা পুলিশের ভিন্নধর্মী নারী সহায়তা কেন্দ্র ‘জাগরণী’র উদ্যোগে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
বরকনের বাবা-মা ও উভয় পক্ষের স্বজনসহ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তোফায়েল আহমেদ, বরগুনা জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সোহেল হাফিজ, বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক চিত্তরঞ্জন শীল, খেলাঘর বরগুনার সেক্রেটারি মুশফিক আরিফ প্রমূখ।
বরগুনা জেলা পুলিশের জাগরণী নারী সহায়তা কেন্দ্রের সমন্বয়কারী এসআই জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, দু’বছর আগে সদর উপজেলার ৫নং আয়লা পাতকাটা ইউনিয়নের সৈযদ মুন্সির মেয়ে নাসরিন আক্তারের সাথে পটুয়াখালী জেলার মৃর্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া গ্রামের মো: শাহজাহান বয়াতীর ছেলে আবুল কালামের বিয়ে হয়।
এ সময় কনে নাসরিন আক্তারের বিয়ের বয়স না হলেও মৌলভী ডেকে গোপনে বিয়ে পড়ানো হয়। তবে বিয়েতে কোন কাজী কাবিন লিখতে রাজী না হওয়ায় বিয়েটি রেজিস্ট্রেশন হয়নি। পরে কনে নাসরিণ আক্তারের বয়স ১৮ পুর্ণ হলে ছেলে পক্ষের কাছে কাবিন দাবি করে কনে পক্ষ। আর তখনই দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
বিরোধের জের ধরে একসময় নির্যাতনের শিকার হন কনে নাসরিন আক্তার। প্রায় ৭ মাস ধরে কনে নাসরিন আক্তারের কোন খোঁজ খবর নেয়নি বরপক্ষ। এ অবস্থায় কনে নাসরিন আক্তার বরগুনা জেলা পুলিশ পরিচালিত জাগরণী নারী সহায়তা কেন্দ্রে অভিযোগ করলে পুলিশ সুপার বিজয় বসাক পিপিএম-এর মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা হয়।
আলাপ আলোচনার পর এক পর্যায়ে ২ লাখ টাকা মোহরানা ধার্য করে নাসরিন আক্তারকে ঘরে তুলে নিতে রাজি হয় বরপক্ষ। এরপর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জাগরণী নারী সহায়তা কেন্দ্রের আয়োজনে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নব দম্পতির সুখী সমৃদ্ধ জীবন কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিয়ের কাজি সাইদুর রহমান।
প্রসঙ্গত আইনী সুবিধা বঞ্চিত দরিদ্র নারীদের সহায়তায় বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের উদ্যোগে ২০১৬ সালের আক্টোবর মাসে চালু করা হয় ভিন্নধর্মী নারী সহায়তা কেন্দ্র ‘জাগরণী’। শুরু থেকে এ পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার ৬০ জন দরিদ্র নারী এ কেন্দ্রের স্মরণাপন্ন হন। ইতোমধ্যে জাগরণীর পরামর্শ ও সহায়তা নিয়ে নিজেদের সংসারে ফিরে গেছেন ৩৭ জন নির্যাতিত নারী। তাদের প্রত্যেকেই পারিবারিক নির্যাতন মুক্ত হয়ে নিজ নিজ সংসারে স্বামী সংসার নিয়ে ভাল আছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
শিরোনামখবর বিজ্ঞপ্তি, টাইমস স্পেশাল, বরগুনা