বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৪:৩৩ অপরাহ্ণ, ১১ অক্টোবর ২০১৬
বরিশাল: ছাত্রদের ‘টর্চার সেল’ খ্যাত অর্নিবান ক্যাডেট কোচিংয়ে আবারও ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এবার টানা চার ঘন্টা আটকে রেখে ছুটির ঘন্টা পেটানোর হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে আব্দুল্লাহ আল আবিদ নামক এক শিশু ছাত্রকে। আবিত দুদিন ধরে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় রয়েছে। এদিকে কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি থানা-পুলিশ।
অভিযোগ উঠেছে, ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে অর্নিবান পরিচালক বেলাল হোসেনকে ধরা ছোয়ার বাইরে রেখেছেন। একই সাথে নির্যাতনকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে আটক করতে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। কোচিংয়ের আবাসিক এক ছাত্র বলেছেন, ১১ অক্টোবরও শহিদুল কোচিংয়ে ক্লাশ নিয়েছেন। ওদিকে পরিচালক বেলালের হুমকিতে গা ঢাকা দিয়ে চলতে হচ্ছে নির্যাতনের শিকার আবিদের পরিবার।
ঘটনাটি ঘটে ৯ অক্টোবর দুপুর দুইটায়। প্রতক্ষ্যদর্শী ছাত্র এবং আবিদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবাসিক ক্লাশে এক বেঞ্চে দুই ছাত্র বসার বিধান। সে অনুসারে একই বেঞ্চে বই রাখা নিয়ে অপর শিক্ষার্থী সাদ এর সাথে আবিদের দ্বিমত হয়। সাদ এই অভিযোগ কোচিংয়ের গনিত শিক্ষক শহিদুল ইসলামের কাছে দিলে তিনি আকস্মাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং অপর ছাত্র তনয় এর মাধ্যমে ছুটর ঘন্টা পিটানোর কাঠের হাতুড়ি খুলিয়ে এনে উপুর্যপরি আবিদকে পিটাতে থাকে। হাসপাতালের দ্বায়িত্বরত চিকিৎস জানিয়েছেন, আবিদেও শরীরে ২৫-৩০টা ছোট ছোট মারের কালো দাগ পাওয়া গেছে। প্রতক্ষ্যদর্শী ছাত্ররা জানয়, মারধর করা শুরু করলে আবিদ প্রথমে গনিত শিক্ষক শহিদুল ইসলামের পায়ে ধওে কান্নাকাটি করেন। শেষে মেঝে লুটিয়ে পরে অনুনয় বিনয় করে কান্না করতে থাকেন। কিন্তু তাতেও হাতুড়ি পেটা বন্ধ কওে না শহিদুল। এক পর্যায়ে জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলে আবিদ।
তখন তাকে নিয়ে বেঞ্চে শুইয়ে রাখে। এ সংবাদ পাবার পর আবিদের মা সেলিনা আক্তার রিতা ওরফে আফরোজা কোচিংয়ে ছুটে গেলে বাইরের গেট আটকে দেন কোচিংয়ের পরিচালক বেলাল। বেলাল বার বার আবিদের মাকে ক্ষমা চাইতে বলেন। যখন আবিদের জ্ঞান ফেরে তখন বিকেল পাঁচটা।
আফরোজা জানান, আমার ছেলের জ্ঞান ফেরার পর তারা আমার হাতে ছেলেকে তুলে দেন। আমি কোতয়ালী থানায় নিয়ে গেলে ওসি নিজেই অভিযোগ দিতে বলে আবিদকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য বলেন। আমি শেবাচিমে ভর্তি করাই। এখনো আবিদ চিকিৎসাধীন।
ওদিকে অভিযোগ গ্রহনের পরও কোন পদক্ষেপ নেয়নি কোতয়ালী থানা পুলিশ। অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েক দফায় থানায় যোগাযোগ করেছেন এবং গিয়েছেন আফরোজা। কিন্তু থানা পুলিশ কিছু বলছে না বলে জানান তিনি।
এদিকে বৈদ্যপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে এসআই সাইফুল এসেছিলেন। এসে পরিচালক বেলাল ও নির্যাতক শহিদুলের সাথে স্বাক্ষাৎ করেছেন। শেষে তাদের ছেড়ে দিয়ে চলে গেছেন। ঐ সূত্রের দাবী, এলাকায় শহিদুল বলে বেড়াচ্ছেন ৩৫ হাজার টাকা তিনি এসআই সাইফুলকে দিয়েছেন। তার প্রেক্ষিতেই আজ (১১ অক্টোবর) বহাল তবিয়তে ক্লাশ করেছেন শহিদুল ইসলাম।
এ ব্যপারে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে সেই শিক্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। শিক্ষক আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে অল্প সময়ের মধ্যে অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব আমরা বলে আশ্বস্ত করেন আওলাদ হোসেন।