বরিশাল: মেয়েটির বয়স ১৫ বছর। বাড়ি বাংলাদেশের বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়ায়। রুবেল নামের একজনের প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে ফেঁসে গেছে সে। বিয়ের মিথ্যা প্রলোভনে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জড়ায়। তারপর পরিবারের অমতেই বিয়ে। কিন্তু সংসার আর করা হলো না গরিব পরিবারের এ কিশোরীর। দেশের মায়া ত্যাগ করে ভারতে চোরাইপথে তাকে চলে যেতে হয়েছে। সেখানে রুবেলের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ইটভাটায় আশ্রয় নেয় শ্রমিক হিসেবে।
কম টাকায় ইটভাটার কাজ করতে রাজিও হয়ে যায় গরিব এ কিশোরী। কিন্তু পাচারকারী রুবেল তাকে যৌনপল্লীতে বিক্রির সুযোগ খুঁজতে থাকে।’ ঢাকার এক মানবাধিকার কর্মীর কাছ থেকে খবর পেয়ে সম্প্রতি ভারতীয় পুলিশ হাওড়ার বঁদর এলাকার ইটভাটা থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেছে।’ পুলিশ জানিয়েছে, রুবেল দেওয়ান নামে এক নারী পাচারকারী তাকে এ দেশে নিয়ে আসে। বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে তারা এখানে ঢোকে। রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া গেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।’
পাচারকারী রুবেলকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাংলাদেশ থেকে ২৫ জন মেয়েকে ভারতের মুম্বাইয়ের যৌনপল্লিতে বিক্রি করেছে। এক থেকে সাত লাখ টাকায় সে মেয়েদের বিক্রি করে।’ পুলিশ জানায়, পাচারকারীরা প্রেমের নাটক করে বা বিয়ের প্রতিশ্র“তি দিয়ে কিশোরী, তরুণীদের এ দেশে আনে। ওই কিশোরী পুলিশকে জানায়, ভারতে ভাল ব্যবসা করে বলে রুবেল জানিয়েছিল। এরপরেই মেয়েটিকে বিয়ে করে সে এ দেশে নিয়ে আসে। এদিকে এখানে এসে মেয়েটি জানতে পারে বরিশালের পাশ্ববর্তী জেলা মাদারীপুরে রুবেলের স্ত্রী ও সন্তান আছে।’
মুম্বাইয়ে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য তাকে মিথ্যা কথা বলে নিয়ে আসা হয়েছিল। কোথায় বিক্রি করবে তা ঠিক করতে দেরি হওয়ায় ইটভাটায় আত্মগোপন করেছিল তারা।’ গ্রেপ্তার রুবেলের বরাত দিয়ে পুলিশ ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়- এই এরআগে অন্তত আরও ২০ মেয়েকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নিয়ে আসে।
পবরর্তীতে তাদের যৌনপল¬ীতে মোটা অর্থে বিক্রি করে দেয়। তারাও বর্তমানে মুম্বাইয়ের যৌনপল্লিতেই রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কর্মীরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন- ভারতে পাচার হওয়া সকল তরুণীকেই উদ্ধার কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি বরিশালের যে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে আইনী প্রক্রিয়া শেষে দেশে নিয়ে আসা হবে।’
বরিশালের খবর