বরিশাল: বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) জাকির হোসেন’র বাসার গৃহকর্মী কন্যা শিশু রাজিয়া খাতুন’র (১৩) রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে।
প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে এটি একটি আত্মহত্যার ঘটনা।
মৃত গৃহপরিচালিকা রাজিয়া (১৩) বরিশালের হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের খুন্না গোবিন্দপুর এলাকার নূরুল ইসলামের মেয়ে।
বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে যোগাযোগ করা হলে এডিএম জাকির হোসেন জানান, তিনি হিজলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীন সময়ে রাজিয়া তাদের কাছেই থাকতো। এরপর পারিবারিক সক্ষতার কারনে রাজিয়া বরিশালে তাদের কাছে থেকে সন্তানদের দেখাশুনা করতো। তাবেশ ক’বছর ধরেই মেয়েটি তার বাসায় রয়েছে। তার বাবার নাম নূরুল ইসলাম ঢালী। তাদের বাড়ি হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের খুন্না গোবিন্দপুর গ্রামে।
তিনি বলেন, বরিশাল নগরীর জর্ডন রোড এলাকায় বর্তমান ভাড়া বাসায় থাকাকালে মেয়েটির সাথে পার্শ্ববর্তি বাসার কাজের ছেলে বরিশাল সদর উপজেলার কালীজিরা এলাকার মিলন’র (১৫) প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। প্রথমদিকে চাপা থাকলেও সোমবার বিষয়টি তার (এডিএম) স্ত্রী’র কাছে ধরা পড়ে। তিনি মেয়েটিকে বকা-ঝকা করেন এবং তার বাবাকে খবর দেন বরিশালে এসে রাজিয়াকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। এতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে রাত পৌনে ১০টা নাগাদ সে বাসার গ্রীলের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
রাজিয়াকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেণ।
আলোচ্য মিলনের খোজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, সোমবার রাত থেকে সেও নিখোঁজ।
সে যে বাড়িতে থাকতো সেই বাড়ির মালিক শাহাবুদ্দিন জানান, ‘দুপুরে বেরুনোর পর সে আর বাসায় ফেরেনি। পরে রাতে ফোন করে মিলন জানায় যে সে এ্যাক্সিডেন্ট করে হাসপাতালে আছে। এটুকু বলে লাইন কেটে দেয়ার পর পূনরায় ফোন ব্যাক করলে অপরিচিত এক তরুন সেটি রিসিভ করে জানায় যে মিলন তার বন্ধু আর সে তার বাসায় বেড়াতে এসেছে। এরপর লাইনটি কেটে দেয়া হয়। পরবর্তিতে আবার ফোন দেয়া হলে ওই নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বর্তমানে সে কোথায় আছে তার কোন খবর পাওয়া যায়নি।’
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন জানান, ‘গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় মেয়েটিকে এডিএম সাহেবের পরিবারের সদস্যরাই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। মৃত্যুর কারন সর্ম্পকে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলা যাবেনা। সুরতহাল, ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই কেবল সঠিক মন্তব্য করা যাবে।’ ঘটনা সর্ম্পকে আপাততঃ একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
টাইমস স্পেশাল, বরিশালের খবর