বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১১:৫৪ অপরাহ্ণ, ১৯ মার্চ ২০১৭
বহুল আলোচিত সমালোচিত ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল ইসলাম বাপ্পীকে একটি চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ অধ্যাপক মো. অলিউল ইসলামের দায়ের করা মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। পরবর্তীতে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অমিত কুমার দে ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পীকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। একই সাথে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো বাপ্পীর আরও ৩ সহযোগিকেও কারাগারে পাঠানো হয়।
এই তিনজন হলেন, ছাত্রলীগকর্মী মো. শাকিব, মো.এইচএম হাসিবুল ইসলাম ও মো. রুবেল ব্যাপারী। হাতেম আলী কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি বাপ্পী প্রায়শই নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংগঠিত করে আলোচনায় ছিলেন। বিশেষ করে তার বাড়ি সংলগ্ন হাতেম আলী কলেজ তার নিয়ন্ত্রণেই ছিল। যদিও বাপ্পীকে কলেজ বিষয়ক কোন কর্মকান্ডে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
মূলত কর্মীসমর্থকদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নিজে থাকতেন সেইভ সাইডে। কিন্তু এবার কলেজ অধ্যক্ষ সচিন কুমার রায়কে শাসানোর বিষয়টি শোরগোল ফেলে দিয়েছে। মিডিয়ার কল্যাণে এই বিষয়টি সংবাদপত্রে বিশেষ স্থান পাওয়ায় বাপ্পী পড়েছেন বেকায়দায়। বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ শনিবার রাতে তার বাসায় রেড দিয়ে তুলে নিয়ে আসে থানায়। অতঃপর শিক্ষকদের মধ্যে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাসক মো. অলিউল ইসলাম রাতেই বাপ্পীসহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় চাঁদাবাজিসহ অন্তত ৭টি ধারায় অভিযোগ আনা হয়। ঘটনায় প্রকাশ গত ১৬ মার্চ কলেজে অভিভাবক সভা করছিলেন অধ্যক্ষ সচিন কুমার রায়। ওই সময় তিনি এক অভিভাবকের সাথে অসৎ আচরণ করায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তৎক্ষণাত শিক্ষকের শাস্তি দাবি করে গোটা কলেজ ক্যাম্পাস উত্তপ্ত করে রাখে। এক পর্যায়ে সেখানে উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পী গিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখার জোরতর চেষ্টা চালান। যদিও ওই সময় আকষ্মিক তিনি অধ্যক্ষের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পরেছিলেন।
এমন একটি স্থিরচিত্রসহ সংবাদ প্রকাশ করে মিডিয়াগুলো। অবশ্য একই দিনে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ রাখার বিষয়টি নিয়েও বেশ কয়েকটি মিডিয়া সংবাদ প্রকাশ করে। কিন্তু বাপ্পী অধ্যক্ষকে হাত তুলে শাসাচ্ছেন এমন সংবাদটি বেশি মাত্রায় প্রাধান্য পায়। যে কারণে কোতয়ালি থানা পুলিশ ওই অভিযোগেই তাকে গ্রেফতারে অগ্রসর হয়। এক্ষেত্রে ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পীর অভিব্যক্তি হচ্ছে, শনিবার রাতে পুলিশ তাকে ফোন দিয়ে থানায় আসতে বলে। কিন্তু এর আগেই বেশ কয়েকটি পুলিশ পিকআপ গিয়ে তার বাসা ঘিরে ফেলে।
এক পর্যায়ে তাকে তুলে নিয়ে আসে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তার ৩ সহযোগি থানায় আসলে তাদেরও গ্রেফতার করা হয়। বাপ্পীর দাবি ছোট্ট একটি বিষয়কে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে রাজনীতিক ফায়দা লুটছেন কতিপয় ব্যক্তি। তবে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আতাউর রহমান জানিয়েছেন, বাপ্পী প্রায়শই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৪০ থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিয়েছেন। এমনকি ঘটনার দিন তিনি অধ্যক্ষের কাছে চাঁদাও দাবি করেছেন।
সেই টাকা না দেয়ায় সহযোগিদের নিয়ে কলেজের টেবিল ও জানালার গ্লাস ভাঙচুর করেন। এ বিষয়টি তুলে ধরে অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক মো. অলিউল ইসলাম। সেক্ষেত্রে এই মামলায় রাজনৈতিক কোন ব্যক্তি বিশেষের ইন্ধন না থাকাটাই স্বাভাবিক।’’