বরিশাল: কানামাছি, বউচি, হাডুডু, এক্কাদোক্কাসহ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলার প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য বরিশাশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু গত তিন বছর ধরে কোনও প্রতিযোগিতার আয়োজন না করে বরাদ্দে অর্থ লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের দাবি তুলেছে জেলার বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়রা।
ক্রীড়া সংগঠক ও ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন শিপের বরিশাল জেলা দলের ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলাম জাফর বলেন, ‘বরিশালে গত ২/৩ বছরে এ ধরনের খেলা গ্রামীণ খেলাধুলার প্রতিযোগিতা হয়নি। তবে দেশব্যাপী এ ধরনের খেলা চলছে তা আমি টিভিতে দেখেছি। তাহলে বরিশালে কেন খেলা হলো না তা খতিয়ে দেখা উচিত। বরাদ্দকৃত টাকা পেয়ে থাকলে তা কোথায় খরচ করা হয়েছে তা অনুসন্ধান করে দেখা উচিত।’
বরিশাল জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা হোসাইন আহম্মেদ বলেন, ‘গ্রামীণ খেলাধুলা প্রতিযোগিতার একটি কার্যক্রম দেশব্যাপী আছে। তবে এ ব্যাপারে বরিশালের পরিস্থিতি আমার জানা নেই। এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করছে বরিশাল জেলা ক্রীড়া সংস্থা।’
এ ব্যাপারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব নুরুল আলম নূরা বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। আমার কিছুই জানা নেই।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৩ বছর মেয়াদি গ্রামীণ খেলাধুলা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। লক্ষ্য ছিলো তৃণমূল পর্যায়ের খেলোয়াড় ও গ্রামীণ পর্যায়ের খেলা জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।
এ লক্ষ্যে ৭টি বিভাগের জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরিশাল বিভাগে বরাদ্দ হয় এক কোটি টাকা। প্রতি বিভাগ থেকে ৩০ জন খেলোয়াড় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা ছিলো।
ছেলেদের খেলার মধ্যে হাডুডু, দাড়িয়াবান্ধা, মোরগ লড়াই ও তৈলাক্ত বাঁশে ওঠা এবং মেয়েদের জন্য গোল্লাছুট, দঁড়ি লাফ, এক্কাদোক্কা, বউচি, কানামাছি ভো ভো রয়েছে।
২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল এই সময়ের মধ্যে ৩ ধাপে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগী পাঠানোর কথা ছিলো।
কিন্তু মঙ্গলবার এ প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা ও সমাপনী হলেও সেখানে বরিশালের কোনও খেলোয়াড়ের অংশ নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা বলছেন, খেলার নামে বরাদ্দ পাওয়া কোটি কোটি টাকা লোপাট করে পুরো ব্যাপারটি এড়িয়ে গেছেন সংশিষ্টরা।