২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

বরিশালে চুরির অভিযোগে কাঠ মিস্ত্রিকে পিটিয়ে জখম, অমানবিক নির্যাতন

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:০৮ অপরাহ্ণ, ১৩ জুলাই ২০২৪

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক: টিভি চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দিন মজুর কাঠমিস্ত্রি কাওসার আহমেদকে গুরতর পিটিয়ে জখমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে শাপানিয়া এলাকায় বাসিন্দা দিন মজুর কাঠ মিস্ত্রি কাওসার। মানুষের বাড়িতে কাঠ মিস্ত্রির কাজ করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোন মতে সংসার পরিচালনা করে।

সূত্রে জানা যায়, গত ৯ জুলাই পার্শবর্তী এলাকা ৩ নং ওয়ার্ডের কাগাশুরা শরীফ বাড়ির রানা শরীফের ঘর থেকে টিভি চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় রানা শরীফ কাউনিয়া থানার চুরির অভিযোগ করেন। এরপর ঘটনার দিন গত ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে একই এলাকার রানা শরীফ ওরফে কুত্তা রানা সন্দেহের বসে ভাগিনা আলিফকে দিয়ে দিন মজুর কাওসার ও তার স্ত্রীকে ডেকে আনে রানার বাড়িতে।

কাওসার ও তার স্ত্রী রানার বাড়িতে আসার পর রানা শরীফ তাদেরকে ঘড়ে বসিয়ে রেখে এলাকার কয়েজন বখাটে যুবকে মুঠো ফোনে ডেকে আনে। এরপর রানা শরীফের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক বাড়ির গেট বন্ধ করে এবং ঘরের দরজা বন্ধ করে কাওসার ও তার স্ত্রী মুঠো ফোন কেড়ে নিয়ে চাল পড়া খাইয়ে দোষী সাবস্ত করে রানা ও রানার স্ত্রী দুজনকে দুই রুমে নিয়ে বেধরক মারধর করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাওসার কাঠ মিস্ত্রি ও দিনমজুর কাজ করর স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোন মতে জীবনযাপন করেন। কাঠ মিস্ত্রি কাওসারের বয়স পয়ত্রিশ এর কোঠায় গেলেও বিগত দিনে তার বিরুদ্ধে কখন কোন খারাপ রেকর্ড নেই এলাকায়।

অপর দিকে প্রভাবশালী রানা শরীফকে এলাকার সবাই কুত্তা রানা হিসেবেই চেনে এবং প্রায়শই দাম্ভিকতা সাথে পরিচয় দেয় ইউনিয়ন সেচ্চাসেবকলীগের সভাপতি। অথচ দলীয় একাধিক লোকের কাছে জানা যায় রানাকে ইউনিয়ন সেচ্চাসেবকলীগের কোন পদ এখনও দেয়া হয় নি। সেচ্চাসেবক লীগের সভাপতি হিসেবে নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় কুকর্ম সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। বিভিন্ন অপকর্মের হোতা হিসেবে পরিচয় কুত্তা রানা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন বলে কাওসারকে যদি সন্দেহ হয়ে থাকে তাহলে রানার আগে থেকেই থানায় অভিযোগ দেয়া ছিল, থানা পুলিশের হাতে তুলে দিত তারা আইনি ব্যবস্থা নিতেন। এভাবে তো সন্দেহ করে বাড়িতে ডেকে এনে বাড়ির গেট দরজা বন্ধ করে চাল পড়া খাইয়ে দোষী সাবস্ত করে অমানুষিক নির্যাতন করতে পারে না, ‍এটা অমানুবিক।

কাওসারের স্ত্রী লাইজু আক্তার জানান, রাত নয়টা থেকে দুইটা পর্যন্ত আমাকে আর আমার স্বামীকে চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বেধরক মারধর রানা শরীফ, সম্রাট শরীফ, আনোয়ার মুন্সি, আলীফ সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন। এসময় রানা আমার স্বামীকে চুরির ঘটনা স্বীকার করানোর জন্য পাইপ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেধরক পিটায় এবং সম্রাট শরীফ প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ উপরে ফেলার চেষ্টা করে।

আহত কাওসার বলেন রানা ওরফে কুত্তা রানা চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে বেধরক মারধর করেছে। রাত দুইটার দিকে আমার স্বজনরা পুলিশে খবর দেয়। কাউনিয়া থানা পুলিশ এসে আমাদেকে উদ্ধার না করলে আমাদেরকে মেরেই ফেলত নির্যাতন করতে করতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহতের এক স্বজন বলে, আমাদের আত্মীয় যদি চুরি করেও থাকে সেজন্য তো পুলিশ প্রশাসন আছে, এভাবে একজনকে ডেকে নিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে নৃশংস নির্যাতন করবে এটা তো হতে পারে না। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান আহত ও তার স্বজনরা এবং ঘটনার সাথে জরিতদের দৃষ্টান্তমূলত শাস্তির দাবি করেন।

151 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন