মা ইলিশ ধরায় ওপরে ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে হয়েছে গত সোমবার। সেই দিন থেকে বরিশালের নদ-নদী ও সাগরে পুনরায় জেলেরা ইলিশ ধরা শুরু করেছে। অবশ্য জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। ফলে ইলিশে সয়লাব বরিশাল শহরের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পোর্ট রোডসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের হাট-বাজার। কিন্তু জেলেদের শিকারের এসব ইলিশের অধিকাংশের পেটে ডিম রয়েছে।
এমতাবস্থায় ব্যবসায়িরাও জানিয়েছেন- নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ধরা পড়া ইলিশের মধ্যে বেশির ভাগের পেটে ডিম পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য তারা মৎস্য বিভাগকে দায়ী করছেন।
অবশ্য এক্ষেত্রে ব্যবসায়ি ও জেলেদের যুক্তি হচ্ছে- মৎস্য অধিদপ্তর ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিলেও এই সময়ের মধ্যে অধিকাংশ ইলিশ ডিম ছাড়েনি। সেগুলো এখন জেলেদের জালে ধরা পড়ছে।
যদি নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ১৫ দিন অর্থাৎ ১৫ অক্টোবর থেকে ২২ দিন করলে ভাল রেজাল্ট পাওয়া যেত।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র জেলে সমিতির সভাপতি ইসরাইল পন্ডিতের ভাষ্য হচ্ছে- আবহাওয়া প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। ফলে ইলিশের পরিবর্তিত হচ্ছে প্রজনন সময়কাল। যে কারণে এই কার্যক্রমের আগে জেলেদের সাথে আলোচনা করে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নির্ধারণ করা জরুরি।
অথচ এই বাস্তবতায় বরিশাল মৎস্য বিভাগ দাবি করছে- ইলিশ রক্ষায় তাদের নিষেধাজ্ঞা যথা সময়ে হয়েছে এবং পুরোপুরি সফল।
বরিশাল মৎস্য বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আজিজুল হক বলছেন, তাদের এবারের অভিযান পুরোপুরি সফল হয়েছে। যার সুফল ভবিষ্যতে দেশের মানুষ ভোগ করতে পারবে বলে আশাবাদী তিনি।’ কিন্তু এ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলছেন, জলবায়ুগত কারণে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে অনেকাংশে গড়মিল রয়েছে।
যে কারণে এখনও নদী বা সমুদ্রে প্রচুর মা ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞার সময়ে যদি ১০ ভাগ ইলিশও ডিম ছেড়ে থাকে তাতে দেশের নদ-নদী-সাগর ইলিশে ভরে যাবে।
এই বাস্তবতায় চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞায় ছাড়া ডিমের ইলিশগুলো রক্ষায় ১ নভেম্বর থেকে আট মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। জাটকা (৯ ইঞ্চির কম সাইজের ইলিশ) ধরার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত।’’
শিরোনামবরিশালের খবর
