বরিশালের গ্যাসচালিত অটোরিকশায় চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে আবারও এক ভয়ানক সন্ত্রাস সৃষ্টি করলেন সন্ত্রাসের বরপুত্র লিটন মোল্লা। এই সস্ত্রাস বাহিনী প্রতিপক্ষ শ্রমিকলীগ নেতা হুমায়ন কবির মোতালেবের লোক খোরশেদকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে হাত পা ভেঙে দেয়। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শহরের জেলখানার মোড় এলাকায়। এ ছাড়াও বরিশাল শহরের লঞ্চঘাট এলাকা থেকে মোরসালিন নামে আরও একজনকে পিটিয়েছে। এই দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়।
খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে- গ্যাসচালিত অটোরিকশায় চাঁদাবাজি নিয়ে বরিশাল জেলা মিশুক, বেবি ট্যাক্সি, সিএনজি, এলপি গ্যাসচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের কথিত সভাপতি হুমায়ন কবির মোতালেব ও বরিশাল জেলা, ট্যাক্সি, অটোরিক্সা, টেম্পু, আলফা-মাহিন্দ্রা, থ্রি হুইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি লিটন মোল্লার লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল।
শ্রমিকলীগ নেতা মোতালেব গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক দাবিদার সবুজ জমাদ্দার জানিয়েছেন, সংগঠনের সদস্য মোরসেলিন নগরীর জেলখানার মোড়ে শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের জন্য সংগঠনের আওতাভুক্ত গাড়িগুলো থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা তুলছিলেন। আকস্মিক বেলা ১১টার দিকে একটি থ্রি-হুইলার মাহিন্দ্রায় করে লিটন মোল্লার লোকজন এসে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে তুলে নেয়। পরবর্তীতে মোরসালিনকে নগরীর গরিয়ারপাড়ে বরিশাল জেলা, ট্যাক্সি, অটোরিক্সা, টেম্পু, আলফা-মাহিন্দ্রা, থ্রি হুইলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
সেখানে ওই সংগঠনের সভাপতি কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিটন মোল্লা ও তার সহযোগীরা মোরসেলিনকে পিটিয়ে ডান হাত ভেঙে দেয়। এছাড়াও তার সাথে থাকা ৩ হাজার টাকা জোর করে নিয়ে যায়। পরক্ষণে নগরীর লঞ্চঘাট এলাকায় লিটন মোল্লার লোকজন সকল গাড়ি থেকে ৩০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করছিল।
তবে আমাদের সংগঠনের সদস্য ও গ্যাসচালিত অটোটেম্পু চালক খোরশেদ চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। একে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ব্যাপক মারধর করেন লিটন মোল্লার লোকজন। এ সময় পিটিয়ে তার এক হাত ও এক পা ভেঙে দেয়া ছাড়াও কুপিয়ে কানের কিছু অংশ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আহত দু’জনকেই গুরুত্বর অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই বিষয়টি কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ এবং র্যাব কার্যালয়ে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ন কবির মোতালেব বলেন, এই ঘটনায় আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল জেলা, ট্যাক্সি, অটোরিকশা, টেম্পু, আলফা-মাহিন্দ্রা, থ্রি হুইলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি লিটন মোল্লা জানিয়েছেন, আমি রোববার থেকে অসুস্থ। যে কারণে বাসায় রয়েছি। কিন্তু শুনেছি লঞ্চঘাটে একটি ঝামেলা হয়েছে।’
এমতাবস্থায় খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে এই দুটি গ্রুপ এর আগেও একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। যে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়বাত সাদিক আব্দুল্লাহ পর্যন্ত গড়িয়েছিল। ওই সময় এই নেতা আনুষ্ঠানিক সভা করে উভয়পক্ষকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন বরিশালে চাঁদাবাজি চলবে না। কিন্তু সাদিকের বরিশালে না থাকাকে মোক্ষম সুযোগ হিসেবে নিয়ে ফের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয় দুটি গ্রুপ।”
শিরোনামবরিশালের খবর