বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৯:৩৫ অপরাহ্ণ, ২৯ এপ্রিল ২০১৬
বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সামিট বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে। এর ফলে বরিশাল অঞ্চলে বিদ্যুৎ পাওয়ার চান্স ৯৯ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সামিটের চেয়ারম্যান মু. আজিজ খান।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-বিডিডিবি’র সাথে ১৫ মাসের মধ্যে উৎপাদন শুরু করার চুক্তি হয় সামিট কোম্পানির। কিন্তু দুই মাস আগেই তারা সফলতার মুখ দেখেন। শুক্রবার বরিশালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন সামিট কর্পোরেশন লিমিটেডের পরিচালকরা।
এ সময় বরিশালের সাংবাদিকদেরও কেন্দ্র ঘুরিয়ে দেখানো হয়। পরে সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানির চেয়ারম্যান মু. আজিজ খান বলেন, কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে রূপাতলী এলাকায় ৯ একর জমির ওপর ২০০৬ সালে এই বিদ্যুত কেন্দ্রটি গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়।
৫৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১১৯.৫ মেগাওয়াট। ১০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিরলস পরিশ্রমে গড়ে ওঠা কেন্দ্রটি সর্ম্পকে সামিট চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বাড়ী বরিশালের পাশে ফরিদপুরে। আমরা বরিশালকেও তাই একই রকম ভালবাসি।
তিনি জানান, কেন্দ্রটি ৫ এপ্রিল থেকে জাতীয় গ্রিডে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করছে। এই বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে নিকট ভবিষ্যতে দক্ষিণাঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ১৫-২০ শতাংশের ঘরে চলে যাবে বলে আশার কথা শোনান তিনি। বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটির ডিজাইন ও নির্মাণ করেছে বিশ্বখ্যাত ওয়াটসিলা ফিনল্যান্ড কোম্পানি।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন চেয়ারম্যান। সাংবাদিক সম্মেলনে সামিটের চেয়ারম্যান বলেন, বরিশাল হচ্ছে সামিটের ১৩ তম বিদ্যুৎ কেন্দ্র । ব্রান্ড নিউ মেশিন দিয়ে পরিচালিত কেন্দ্রটি দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বলে দাবি তার। আগামীতে সামিট আরো উন্নত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে চায় বলে জানান তিনি।
মু. আজিজ খান বলেন, একদিকে পদ্মা সেতু আর অন্যদিকে সামিটের বিদ্যুতের ফলে বৃহত্তর বরিশাল দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় বড় রকমের উন্নতির দিকে চলে যাবে। বরিশাল বাংলাদেশেরই উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে বলে দাবি করেন তিনি।
সামিট কোম্পানি লাভজনক জানিয়ে তিনি বলেন, এর লাভ দিয়েই এত বড় বড় কেন্দ্র করা হচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে প্রতি কিলোওয়াট-ঘন্টা বিদ্যুৎ প্রায় সাত টাকায় বিক্রি করি। সামিট চেয়ারম্যান জানান, আমরা এই কেন্দ্রটিতে নিজস্ব জেটিতে তেল খালাস করি।
১৫ দিনের জ্বালানীর মজুদ নিশ্চিত করতে সাত হাজার মেট্রিক টন ধারণ-ক্ষমতার ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। ফলে যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবো। প্রায় এক মাস আগে সামিট বরিশালে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করলেও কেন আগের মতোই লোডশেডিং হচ্ছে জানতে চাইলে সামিট চেয়ারম্যান বলেন, এক জায়গার বিদ্যুৎ অন্য স্থানে নিতে গেলে সিস্টেম লস হয়।
তাই বরিশালের বিদ্যুৎ বরিশালেই বেশি সরবরাহ হওয়ার কথা। এবিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়েছে জানিয়ে আজিজ খান বলেন, আমরা সবাই অর্থনৈতিক মুক্তিযোদ্ধা। দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সামিট এ যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।