বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৭:২৯ অপরাহ্ণ, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ইসলামিয়া মাদরাসা কেন্দ্র থেকে দাখিল পরীক্ষার দু’টি বিষয়ের নৈর্ব্যত্তিক ও লিখিত পরীক্ষার ৪টি প্রশ্নপত্র ফাঁস করে সংলগ্ন একটি বাড়িতে বসে উত্তরপত্র তৈরির সময় কেন্দ্র সচিবসহ ৬ শিক্ষককে হাতেনাতে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
রোববার পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌর শহরের রূনসী এলাকার এম. রহমান সড়কের মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় ৪টি প্রশ্ন ও উত্তরপত্র।
এর সাথে জড়িত অন্যান্যদেরও আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলা দায়েরসহ আটক ৬ জন এবং পলাতকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার এসএম আক্তারুজ্জামান বরিশালটাইমসকে জানান- চলমান দাখিল পরীক্ষায় বাকেরগঞ্জের ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের সচিবসহ অন্যান্য শিক্ষকরা প্রতিটি পরীক্ষা শুরুর আগে সিলগালা প্যাকেট ভেঙে প্রশ্নপত্র বাইরে পাঠিয়ে উত্তরপত্র তৈরি করে কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকদের কাছে পাঠিয়ে আসছিলো।
পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা নিয়ে দায়িত্বরত শিক্ষকরা ওই উত্তরপত্র কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের বলে দিতো এবং পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্রে উত্তর লিখতো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ খবর পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কঠোর নজরদারী শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে পদার্থ বিজ্ঞান এবং ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের লিখিত ও নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্নপত্র ফাঁস করে সংলগ্ন মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়িতে উত্তরপত্র তৈরি করছিলো শিক্ষকরা।
এ সময় ওই কেন্দ্রের সচিব মাওলানা বশিরউদ্দিন, মাওলানা নুরুজ্জামান, মাওলানা জসিমউদ্দিন, মাওলানা মেহেদী হাসান, মাওলানা আবু হানিফ এবং মাওলানা আব্দুস ছালামকে হাতেনাতে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। তাদের কাছ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান এবং ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের লিখিত ও নৈর্ব্যত্তিক ৪টি প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্র উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধারকৃত প্রশ্নপত্রের সাথে রোববার দাখিল পরীক্ষার পদার্থ বিজ্ঞান ও ইসলামের ইতিহাস প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযানে নেতৃত্বদানকারী জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শাহাবউদ্দিন কবির।
তিনি বলেন- উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর আগেই পুলিশের হাতে সংশ্লিষ্টরা আটক হয় এবং প্রশ্ন ও উত্তরপত্র জব্দ হয়। অভিযানের সময় বাড়ির মালিক মেস্তাফিজুর রহমান পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। তাদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন সহকারী পুলিশ সুপার শাহাব উদ্দিন কবির।