মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো মাথা। যদিও বলা হয় সেই মাথার ভেতরে পোকায় বাসা বেধেছে এবং তা নাক দিয়ে বেড়িয়ে আসছে। এমটি হয়তো কেউই বিশ্বাস করবে না। অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে। কারণ বাংলাদেশে এমন ঘটনার উদাহরণ খুব কমই রয়েছে।
কিন্তু এমন এক রোগীর সন্ধান মিলেছে বরিশাল। যে ঘটনায় হকচকিয়ে গেছেন খোদ ডাক্তারও। তবে ডাক্তার জানিয়েছেন- ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এটি একটি রোগ।
আক্রান্ত রোগী মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের হনুফা বেগম (৪০)। গত কয়েক দিনে তার হাঁচির সাথে নাক দিয়ে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি জীবন্ত পোকা বের হয়েছে।
বর্তমানে তিনি বরিশাল নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকার একটি ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খান আব্দুর রউফের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চিকিৎসক জানিয়েছেন- এ রোগের নাম হচ্ছে ‘ম্যাগোট ইন দ্য নোজ অ্যান্ড প্যারানাজাল এয়ার সাইনাস’। নাক, চোখ ও কপালের অভ্যন্তরে একাংশে ফাঁকা জায়গা থাকে। কোনোভাবে পোকা সেখানে প্রবেশ করতে পারলে খালিস্থানে বাসা বাঁধে ডিম পাড়ে। এরপর ওই ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।
তিনি বলেন- অচেতন অবস্থায় হনুফার নাকের ভেতর ওই পোকাটি প্রবেশ করে ডিম দেয়ায় সেই ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়ে পোকার বাসা বেঁধেছে । চিকিৎসার পর এ অবস্থা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন হনুফা। তবে দেরি হলে জটিল আকার ধারণ করতো। এখন একটি সিটিস্ক্যান করে পোকার বাসাটি নির্ণয় করার পর, ওই বাসা ওষুধের মাধ্যমে ধ্বংস করা হবে।
হনুফা বেগম বলেন, অনেক দিন থেকে মাথা ব্যথা ও চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছে। এ জন্য মাঝে মধ্যে মাথা ব্যথার ওষুধ খেয়ে তা নিবারণের চেষ্টা চালাতাম। সর্বশেষ গত ২১ ফেব্রুয়ারি নাক থেকে রক্ত বের হয়। এতে করে মাথা ব্যথা আরও বেড়ে যায়। গৌরনদীর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে গেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি পুনরায় নাক থেকে রক্ত বের হতে থাকে। পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসক একধরনের যন্ত্র ব্যবহার করে নাকের ভেতর কী যেন করেন। এরপর তিনি হাঁচি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় আকারের ১৫ থেকে ২০টি জীবন্ত পোকা বের হয়ে আসে। একইভাবে গতকাল সোমবার আবারও হাঁচি দিলে ১০ থেকে ১২টি পোকা নাক থেকে বের হয়। এতে করে তার মাথা ব্যথা অনেকটা কমে আসে।
শিরোনামবরিশালের খবর, বিশেষ খবর