বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১১:২২ অপরাহ্ণ, ১৭ জুন ২০১৬
বরিশাল: নগরীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধীয় জেরে দুই সহোদরকে কুপিয়ে জখম বাবা-ছেলের সন্ত্রাসী বাহিনী। এসময় সেই বাহিনীর ক্যাডাররা ওই দুই সহোদরের মাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার বিকেলে নগরীর ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড এলাকায়। এ ঘটনায় আহত দুই সহোদর সেজান মাহমুদ (২৫) এবং খালিদ মাহমুদ রাজনকে (২৫) উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা ওই এলাকার মৃত জহির আলম আবুর ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- ওই এলাকার সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক হুমায়ন কবির মোতালেব প্রতিবেশি মৃত জহির আলম আবুর পরিবারের একটি জমি দীর্ঘদিন যাবত ভোগদখল করে আসছে।
পাশাপাশি সে এবং তার ছেলে রকি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওই পরিবারের আরও কিছু জমি দখলের চেষ্টা চালায়। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থাকা মোতালেব ওই পরিবারের সদস্য একটি মিথ্যে চাঁদাবাজি মামলা দিয়েও হয়রানির ওপর রাখে। যদিও পুলিশের তদন্তে ওই মামলাটির কোন সত্যতা না মেলায় বাদীর নারাজি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তা পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।’ যদ্দুর জানা গেছে- তদন্তকারী সংস্থাটির কর্মকর্তারা সেই মামলাটির অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখছে। কিন্তু হুমায়ন কবিরের দায়ের করা সেই মামলার অভিযোগে প্রাথমিকভাবে কোন সত্যতা পায়নি।
খুব শীঘ্রই পিবিআই তাদের প্রতিবেদন দেবে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। মূলত সেই বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই ক্ষুব্ধ মোতালেব এবং তার ছেলের সন্ত্রাসী বাহিনী ওই নিরীহ পরিবারটির ওপর হামলা চালায়।’ ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান- আহত সেজান এবং রাজনের মা শেবাচিমের সিনিয়র স্টাফ নার্স খালেদা পারভীন তাদের জমিতে বিল্ডিং করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু ওই জমিটির বেশ কিছু অংশ দখলের পায়তারা চালায় মোতালেবের পরিবার। এমনকি ওই জমিটিতে যেন খালেদার পরিবারকে ভবন নির্মাণের অনুমোতি না দেয়া হয় সেজন্য বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে একটি অভিযোগও দেয় মোতালেব। তবে কাগজপত্র বলে খালেদা রাইট থাকায় বিসিসি ভবন নির্মাণের অনুমোতি দিয়ে বাধ্য হয়।
সেই মতে তারা ওই জমিতে ভবন করার উদ্যোগ নিলে গতকাল হুমায়ন কবির মোতালেব এবং তার ছেলে রকি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা চালায়। এসময় এক পর্যায়ে খালেদা পারভীনের দুই ছেলে সেজান মাহমুদ (২৫) এবং খালিদ মাহমুদ রাজনকে কুপিয়ে জখম করে। সেই হামলা থেকে ছেলেদের রক্ষায় এগিয়ে গেলে খালেদা পারভীনকে প্রতিপক্ষরা বেধড়ক পিটুনী দেয়। এমনকি তার শরীরের কাপড়-চোপড়ও টেনে ছিলে ফেলে।’ ওই হামলায় মোতালেবের মেয়ে জামাই হারুন এবং ছেলে ভাড়াটে সন্ত্রাসী আজাদ, সাজু, সাবু এবং মোশারেফও অংশ নেয়। খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি টিম এবং র্যাব সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। কিন্তু ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করেনি। ফলে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে নানামূখী প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
যদিও পুলিশ বলছে- কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এবং বিষয়টি তিনি মিমাংসা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার কারণে কাউকে আটক করা হয়নি। অবশ্য শ্লীলতাহানির শিকার খালেদা পারভীনও বলছেন- সাংসদ পুত্র সাদিক আব্দুল্লাহ যেহেতু বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন, তাই এখনই আইনের আশ্রয় নিতে চাইছেন না। শেবাচিমের ডাক্তারা জানিয়েছেন- আহত দুই সহোদরের অবস্থা গুরুতর ছিলো।
কিন্তু চিকিৎসা দেয়ার পরে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে আরও অনেক সময় লাগবে। কারণ তাদের উভয়ে মাথায় ধরালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।’ এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদুল আলম জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। পাশাপাশি আহত দুই ভাইকে উদ্ধার করে শেবাচিমে নিয়ে যান। ’