সৈয়দা মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রোববার (১২ নভেম্বর) বরিশালের সিনিয়র সহকারী জজ হাদিউজ্জামান বিচারাধীন সদর আদালতে শিক্ষিকা সাহানা বেগম মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, কমিটির সম্পাদক ও প্রধান শিক্ষক, বরিশাল সদর উপজেলার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, রুপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিদ্যালয় পরিদর্শক, বরিশালের জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়। অ্যাডভোকেট আজাদ রহমানের মাধ্যমে সাহানা মামলার আরজিতে আদালতে বলেন- তিনি ১৯৯২ সালের ২৫ ডিসেম্বর সৈয়দা মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা পদে নিয়োগ পেয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
১৯৯৫ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। প্রধান শিক্ষকের বে-আইনী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে প্রধান শিক্ষক এ কে এম আজিজুল হক তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে চাকুরীতে ক্ষতি করার অপচেষ্টা চালায়। বিদ্যালয়ে গেলেও প্রধান শিক্ষক তাকে হাজিরা বহিতে স্বাক্ষর করতে দেননি। এ ব্যাপারে তিনি ২০০৮ সালের ১০ মে কোতয়ালি মডেল থানায় জিডি এবং ১০ আগস্ট জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা প্রশাসক বিষয়টি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন।
২০০৮ সালের ৫ নভেম্বর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উভয়পক্ষের শুনানি শেষে প্রতিবেদন দিয়ে বলেন- প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে সাহানাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেয়নি। সাহানার সাময়িক বরখাস্ত বিবেচনায় নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রতিবেদন পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও উন্নয়ন এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সরোয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন।
প্রধান শিক্ষক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সাহানা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয় শিক্ষা বোর্ড বিদ্যালয় পরিদর্শককে তদন্তে দিলে তিনি প্রতিবেদনে বলেন প্রধান শিক্ষক কলহের কারণে খামখেয়ালি করে সাহানাকে সাময়িক বরখাস্ত করে অর্ধেক বেতন ভাতা দিচ্ছে। বিবাদী সরোয়ার ও প্রধান শিক্ষক সেদিকে কর্ণপাত না দিয়ে চাকুরি বিধি অমান্য করে সাহানাকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করে অনুমোদনের জন্য ২০১৫ সালের ২৭ এপ্রিল বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে পাঠায়।
বিদ্যালয় পরিদর্শক ১১ মে সাহানাকে বোর্ড চেয়ারম্যানের কক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য দিতে যেতে নির্দেশ দেন। নির্ধারিত দিনে তিনি চেয়ারম্যানের কক্ষে গেলে তাকে জানানো হয় আত্মপক্ষে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেয়া হবে।
পরবর্তীতে তাকে কোন প্রকার সুযোগ না দিয়ে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিদর্শক কমিটির সভাপতি সম্পাদকের সাথে যোগসাজশ করে গত ১৫ অক্টোবর তাকে চূড়ান্ত বরখাস্ত অনুমোদন করেছেন বলে জানান। সাহানা তার চাকুরি বহাল রাখার আদেশ চেয়ে মামলা দায়ের করলে আদালত আদেশের জন্য রেখে দেন বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।”
শিরোনামবরিশালের খবর