বরিশাল: আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের মূলহোতা শাওনকে অবশেষে বাগে আনতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। সেই সাথে উদ্ধার করা হয়েছে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া একটি পালসার মোটরসাইকেলটি। কাউনিয়া থানা পুলিশের সোমবার রাতে রুদ্ধদার অভিযানে শাওন নগরীর মহাবাজ এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়।
একই সাথে তার সহযোগী ফেরদৌস নামে এক যুবককেও জালে নিয়ে আসে পুলিশ। রাত ৭ টায় শেবাচিম থেকে মোটরসাইকেল চুরি ও ১০ টায় উদ্ধারের পাশাপাশি শাওনকে আটকের খবর বরিশালবাসীকে স্বস্তি দিয়েছে। এই শাওন বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচড়ি এলাকায় শামিম মাতুব্বরের ছেলে। তবে সে উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকায় বাবা মায়ের সাথে ভাড়া বাসায় থাকে। অভিযোগ রয়েছে- শাওন এর আগেও একটি পালসার মোটরসাইকেল পিরোজপুরের স্বরুপকাঠি থানা থেকে চুরি করে নিয়ে আসে। সেই মোটরসাইকেলটি কাউনিয়া থানা পুলিশ সাম্প্রতিকালে আটক করে নিয়ে যায়।
যদিও সে দফায় পুলিশ তেমন একটা ভূমিকা না রাখায় এই যুবক রয়ে যায় ধরাছোয়ার বাইরে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সোমবার রাতে শেবাচিম থেকে মোটরসাইকেল চুরির পর তাকে আটক এবং উদ্ধার অভিযানের ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে- শাওন আন্তজেলা মোটরসাইকেল সিন্ডিকেট চক্রের মূলহোতা। যে কারণে তাকে আটকের পর কাউনিয়া থানা থেকে কোতয়ালিতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সূত্রমতে ঝালকাঠির বাসিন্দা জামাল হোসেন সোমবার রাত ৭ টার দিকে শেবাচিম হাসপাতালের ভেতরে সিঁড়ির পাশে ৩টি মোটরসাইকেল রেখে তার বাবার চিকিৎসায় ব্যস্ত ছিলেন।’
কিছুটা সময় পর নিচে নেমে দেখতে পান দুটি মোটরসাইকেল থাকলেও তার পালসারটি নেই। বিষয়টি বরিশাল পুলিশের উচ্চ মহলকে অবহিত করলে মাঠ পর্যায়ে মোটরসাইকেলটি উদ্ধারে ব্যাপক তোড়জোর শুরু হয়। যার দরুণ কাউনিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মীর শহিদুল ইসলাম গোপনে সংবাদ পেয়ে মহাবাজ এলাকার একটি বাসা থেকে শাওনকে আটক ও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেন।
পরবর্তীতে মঙ্গলবার সকালে তাকে ঘটনা সংশ্লিষ্ট থানা কোতয়ালিতে হস্তান্তর করেন। এই ঘটনায় মোটরসাইকেলের মালিক ঝালকাঠি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জামাল হোসেন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস জানান, শাওনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এতে সে আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাছাড়া তার কাছে আরও ভয়ানক চুরির তথ্য রয়েছে এমন ধারণা অনুমানে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পরবর্তীতে এই মামলায় তাকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
পুলিশের মতে, এই যুবক শুধুমাত্র ২/১টি চুরির ঘটনায়ই জড়িত নয়। সে একটি চক্রের নিয়ন্ত্রক। সেই চক্রে উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকার বাবুসহ অন্তত আরও ২০ যুবক জড়িত। শাওনের এমন স্বীকারোক্তির পরে সেইসব যুবকদের তালিকা নিয়ে এখন মাঠে নেমেছে পুলিশ। এক্ষেত্রে বলা চলে পুলিশের এটি একটি সফলতা বটে। কারণ চোরাই মোটরসাইকেল তাৎক্ষণিক উদ্ধারের কথা সাধারণত কমই শোনা যায়। কিন্তু এবার চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার ও আন্তজেলার মূলহোতাকে গ্রেফতারের বিষয়টি রীতিমত পুলিশকে প্রসংশিত করেছে।’
কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন মামুন জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। কারণ যদ্দুর তথ্য পেয়েছেন তাতে শাওন ভয়ানক চক্রের সদস্য। তাছাড়া তার সাথে যারা জড়িত রয়েছে তারাও একই ধরণের। মূলত শাওনের দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তাদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।
খবর বিজ্ঞপ্তি, বরিশালের খবর