বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০২:৪৯ অপরাহ্ণ, ১৩ অক্টোবর ২০১৬
বরিশাল: বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়(শেবাচিম) হাসপাতাল ও আধুনিক সদর হাসপাতালসহ ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলার ১২ হাসপাতালের ১৮ অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে ১২টিই বিকল হয়ে রয়েছে। বাকি ৬টিও হাসপাতাল কর্মচারিদের কারসাজিতে রোগী পরিবহন বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এদিকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রোগীদের জিম্মি করে বাণিজ্য করছে।’
তবে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সকে তো তাড়িয়ে দেয়া যায় না।’
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে- মেডিকেল মোট অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে ৮টি। এর মধ্যে পুরাতন ৫ টি অ্যাম্বুলেন্স অচল হয়ে পড়ে আছে।’
২০১০সালে একটি নতুন অ্যাম্বুলেন্স আনা হলেও দুই বছর ধরে নিবন্ধনের অভাবে গ্যারেজেই পড়ে আছে সেটি। অপর ২টি এ্যাম্বুলেন্স’র মধ্যে লক্করঝক্কর একটি মাসের অধিকাংশ সময়ই অচল থাকছে।’
তাই এ এ্যাম্বুলেন্স দুইটি দিয়েই এখানকার সহশ্রাধিক রোগীর পরিবহন চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। হাসপাতালের ড্রাইভার মো. সুমন বরিশালটাইমসকে জানান, ৩টি অ্যাম্বুলেন্স চালানোর যোগ্য হলেও এর একটি রয়েছে দীর্ঘদিন গ্যারেজে পড়ে। অপর একটি না চলারই মত।’
তিনি বলেন, এ সুযোগে বেসরকারিভাবে ৩০ থেকে ৩৫টি মাইক্রোবাস অ্যাম্বুলেন্স আকারে তৈরি করে রোগী বহনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে। এসব মাইক্রোবাসের অধিকাংশই হাসপাতালের কর্মচারিদের।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- বেসরকারি মাইক্রোবাস এখানকার অ্যাম্বুলেন্সের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলেও তাতে নেই তেমন কোন সুবিধা। কর্মচারিদের আত্মীয়-স্বজনরাই এগুলো চালাচ্ছে।’
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়- শেবাচিম হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারি সমিতির সভাপতি মুদাচ্ছের আলী কবিরের রয়েছে ২টি মাইক্রোবাস।’
শেবাচিম হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি মুদাচ্ছের আলী কবির বলেন, হাসপাতালের সামনে ৩০ থেকে ৩৫টি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করে। সরকারী ২টি অ্যাম্বুলেন্স কোন রকমের চলাচল করে।
তিনি আরও বলেন, তারা ৩ জনের দুইটি মাইক্রোবাস রয়েছে, যা রোগী পরিবহন কাজে ব্যবহার হয়। এ ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, তাদের দুইটি অ্যাম্বুলেন্স রোগী পরিবহন করছে। মেরামত যোগ্য রয়েছে আরো একটি অ্যাম্বুলেন্স।’
বাকি অ্যাম্বুলেন্সগুলো অকেজো। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের কর্মচারিরা রোস্টারের সময় বাহিরের কোন কাজ করতে পারে না। তাদের বাহিরে কোন অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও তাদের কিছু করার নেই।’
এছাড়া সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও কেন রোগীরা বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে যায় তা তার বোধগম্য নয়।’
এদিকে, বরিশাল আধুনিক সদর হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতালসহ ৯ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ১০টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। কিন্তুর এর মধ্যে ৫ থেকে ৬টি অ্যাম্বুলেন্স বিকল। যা মেরামতের কোন সুযোগ নেই।’
ফলে উপজেলার প্রান্তিক রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের রোগী খালেদা বেগমের স্বজন আরিফুল হক বরিশালটাইমসকে জানান, তারা রোগী হাসপাতালে আনার জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। পরে অটোরিকশায় নিয়ে আসতে হয়েছে।’
এ ব্যাপারে বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. এএফএম সফীউদ্দিন বলেন, গৌরনদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটি ফেরত পাঠানো হচ্ছে। সেখানে নতুন অ্যাম্বুলেন্স আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
এছাড়া জেলার ৫ থেকে ৬টি অ্যাম্বুলেন্স মেরামত অযোগ্য রয়েছে। সেগুলোর বিষয়েও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন।’