নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরিশালের মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের নলচিড়া গ্রামের মৃত ইউনুছ হাওলাদারের স্ত্রী মানসিক প্রতিবন্ধী রাহেলা বেগম (৬২) চার বছর ধরে শিকলে বাঁধা জীবন পার করছেন। তিন সন্তানের জননী রাহেলা বেগমকে চিকিৎসা না করিয়ে শিকল ও তালা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যদের দাবি টাকার অভাবে রাহেলা বেগমের চিকিৎসা করাতে পারছে না। তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। জানা গেছে, প্রায় ৪৭ বছর আগে ইউনুছ হাওলাদারের সাথে রাহেলার বিবাহ হয়।
তখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। ৩৫ বছর আগে রাহেলার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন সন্তান নিয়ে বাড়িতেই থাকতেন। রাহেলা বেগমের পুত্রবধূ রেশমা আক্তার জানান, প্রায় ৬ বছর আগে তার শাশুড়ির মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।
তখন তার ছেলে জামাল হাওলাদার ঢাকায় চিকিৎসা করান। চিকিৎসক তাদের জানান, রাহেলা বেগম ব্রেইন স্ট্রোক করায় মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।জামাল হাওলাদার বলেন, শুরুর দিকে তার মাকে ওষুধ খাওয়ানোর পর কিছুটা সুস্থ হন। পাঁচ বছর ধরে সমস্যা আরো বাড়তে থাকে। মাঝেমধ্যে হারিয়ে যেতেন।
অনেক খোঁজাখুঁজি করতে হতো। তাই হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে শিকল দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে।রাহেলা বেগমের ছোট ছেলে কামাল হাওলাদার জানান, মায়ের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন।
বড়ভাই জামাল হাওলাদার অসুস্থ থাকায় কোনো কাজ করতে পারেন না। মেজভাই ও আমি দৈনিক মজুরিতে কাজ করি। আমাদের স্বল্প আয় দিয়ে মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না।
হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে মাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি। ভালোভাবে চিকিৎসা করতে পারলে মা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারত। সরকারি বা বেসরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে মায়ের ভালোভাবে চিকিৎসা করানো সম্ভব হতো।
বরিশালের খবর, বিভাগের খবর
