বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছে ব্যাবসায়িরা
জিয়াউল হক, বাকেরগঞ্জ,বরিশাল: দীর্ঘদিন পরে হলেও বরিশাল কুয়াকাটা মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান চালানোর বিষয়টি মাইকিং করে তিন দিনের সময় বেঁধে দেয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ। আজ তৃতীয় দিনের শেষ দিনে বাকেরগঞ্জ মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছে অনেক ব্যাবসায়িরা।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়েছেন, বরিশাল নগরে সাগরদী থেকে দপদপিয়া পুরাতন ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার মহাসড়কের দুই পাশে গত ১২ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এই অভিযান চালানো হয়।
এরি ধারাবাহিকতায় দপদপিয়ার পুরাতন ফেরিঘাট থেকে বাকেরগঞ্জ লেবুখালি ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহ মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, সড়ক ও জনপদ মাইকিং করেছে। ব্যক্তি উদ্যোগে যাহারা তাদের নির্মিত অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছেন। সড়ক ও জনপথ থেকে আবারও মাইকিং করা হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে না নেয়া হলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেকোনো দিন অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নির্ধারন করা হয়েছে। অভিযান শেষে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে তাদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তিনি আরো জানান,পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
আর মহাসড়কের বরিশাল অংশ হয়ে বাকি ৫ জেলায় যানবাহন চলাচল করায় এ অংশে কয়েক গুণ যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে দুর্ঘটনায় সংখ্যাও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই মহাসড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ১৫ অক্টোবর (শনিবার) বাকেরগঞ্জ চৌমাথা মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনা দোকানপাট সরিয়ে নিচ্ছে ব্যাবসায়িরা। সকাল থেকেই দোকানের মালামাল ভ্যানগাড়িতে করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে লোক ভাড়া করে দোকান ঘর সরিয়ে নিচ্ছে।
মুদি দোকানদার নুর ইসলাম জানান, সরকারি রাস্তায় দোকান ভাড়া নিয়ে দোকান চালাতাম এখন মাইকিং করেছে দোকান সরিয়ে নেয়ার জন্য তাই এখন মালামাল বাড়িতে নিয়ে রাখতেছি। তবে দোকান যে কবে দিবো বলতে পারছি না। এই অভিযানে অনেক মানুষ বেকার হয়ে জাবে। আমাদের আল্লা ছাড়া দেখার কেউ নেই।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বরিশাল কুয়াকাটা সড়কের বাকেরগঞ্জ শহরের মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনার কারণে যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর যানবাহনের চাপ বেশি হওয়ায় এর তীব্রতা বেড়েছে। তাই বাকেরগঞ্জ মহাসড়কের অংশে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
বাকেরগঞ্জ অংশে প্রথম মাইকিং করা হয়েছে। এতে অনেকে নিজেরা তাদের স্থাপনা সরিয়েও নিতে শুরু করেছে। আর যারা সরিয়ে নিচ্ছে না তাদের উচ্ছেদ করতে যেকোনোদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। পর্যায়ক্রমে বরিশাল জেলার আওতাধীন মহাসড়কের সর্বত্র এ অভিযান চালানো হবে।
পৌর সভার ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাইনুল বলেন, বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতাসীনরা অবৈধভাবে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা দখল করে যে যার মতো স্থাপনা গড়ে তুলেছিলেন। সেগুলো ভাড়া দিয়ে অর্থ আদায় করছিলেন। এতে মহাসড়কটি সরু হয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও সরকারি বাকেরগঞ্জ কলেজের সামনে সড়কে অবৈধ দোকান নির্মান করে কলেজের প্রদান প্রবেশপথ আটকে রেখেছে। এ অভিযানের মাধ্যমে সড়ক ও জনপদের জায়গা বেরিয়ে আসবে।
বরিশালের খবর, বিভাগের খবর