জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করার কথা রয়েছে। মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬জন আসামি রয়েছেন।
মামলার রায় নিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা। ওই সভায় বরিশাল বিএনপির অর্ধশত নেতা উপস্থিত ছিলেন। সভায় তৃণমূল নেতাদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় ৮ ফেব্রুয়ারির রায়ের আগে দলের সকল সাবেক সংসদ সদস্য নিজ এলাকায় অবস্থান নেবেন। একই সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতারাও এলাকায় কর্মীদের সঙ্গে থাকবেন। কারণ রায়কে কেন্দ্র করে কর্মীরা যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না করে তা সামাল দেবেন সাবেক সাংসদ ও নেতারা। কিন্তু বরিশাল জেলার ছয়টি আসনের বিএনপিপন্থি কোনো সাবেক সাংসদ বরিশালে অবস্থান নেননি। দেখা নেই শীর্ষস্থানীয় কেন্দ্রীয় অনেক নেতারও। বরিশালে রয়েছেন কেবল বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন ও জেলা দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান।
বরিশালের ছয়টি সংসদীয় আসনের কোনো সাবেক সংসদ সদস্যই নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন না বলে জানা গেছে। বরিশাল ১ (গৌরনদী-আগৈলঝড়া) আসন থেকে ২০০৮ সালে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবদুস ছোবহানও ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ ছাড়া এ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানও রয়েছেন ঢাকায়।
একই আবস্থা বরিশাল ২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের। এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া একমাত্র প্রার্থী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুও রয়েছেন ঢাকায়। বরিশাল ৩(বাবুগঞ্জ-মূলাদী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোশারেফ হোসেন মঙ্গু ও ২০০৮ সালে মনেনয়ন পাওয়া কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সভাপতি বেগম সেলিমা রহমানও রয়েছেন ঢাকায়। তবে বরিশাল ৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জেলা উত্তর বিএনপির সভাপত মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ বরিশালে রয়েছেন বলেন জানা গেছে।
কিন্তু বরিশাল ৫ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এবং বরিশাল মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার ও বরিশাল ৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন খান ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন খান বলেন, ‘আমাদের নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান নেওয়ার সাংগঠনিক নির্দেশনা ছিল। আমরা যেতেও চেয়েছিলাম। তারপর বিএনপি চেয়ারপারসন ও মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা করে আমি ও মজিবর রহমান সরোয়ার ঢাকায় অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। কারণ বৃহস্পতিবার সকালে আমার নির্বাচনী এলাকা বাকেরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনানিবাস উদ্ধোধন করবেন। আর বিকেলে মজিবর রহমান সরোয়ারের নির্বাচনী এলাকা সদর আসন বরিশাল বেলস পার্কে তিনি দলীয় জনসভায় ভাষণ দেবেন। এ কারণে আমরা দুইজন এলাকায় না গিয়ে কেন্দ্রের নির্দেশে ঢাকায় অবস্থান নিয়েছি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) ও সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, ‘জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় নির্দেশনা ছিল সকল নেতারা তাদের নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান নেবেন। আর এমন নির্দেশনা তৃণমূল নেতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া হয়। তাই আমি বরিশালে অবস্থান নিচ্ছি এবং কর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বৈঠক করছি।
বরিশাল জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন বলেন, ‘জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় সকল নেতারাই রায় সম্পর্কে করণীয় নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। তখন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল ৮ ফেব্রুয়ারি রায় যাই হোক না কেন আইনের মাধ্যমে তা সমাধান হবে। তবে কর্মীরা যাতে এ নিয়ে সৃঙ্খলা ভঙ্গ না করে সে জন্য নেতাদের এলাকায় থাকতে হবে। এর কারণ সামনে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন এবং সরকার পতনের আন্দোলন কর্মসূচি সফল করা।
এদিকে, ৮ ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে পুলিশ নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বরিশালজুড়ে। গতকাল বিএনপি জামায়াতের পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে সন্দেহভাজনদের আটকে অভিযান চলছে।
শিরোনামOther