বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৯:০৩ অপরাহ্ণ, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
ঝালকাঠি সদর থানায় নিরাপত্তার আবেদন সত্বেও পুলিশের উপস্থিতিতে হাইকোর্টের আদেশ লংঘন করে থানার দু’শ গজ দূরে বসত বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শহরের রিড রোডে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি লুৎফুন্নাহার লুনার পৈত্রিক বসত ঘরে এ ঘটনা ঘটে। স্টেশন রোড এলাকার বাসিন্দা মৃত শাহজাহান মৃধার স্ত্রী নুরুন্নাহার জাহানের পক্ষে ভাড়াটে সন্ত্রাসী প্রিন্স, শান্ত, ছগির, সিদ্দিক ও মোর্শেদের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসূী এ দখল ও লুটপাটে অংশ নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন লুৎফুন্নাহার লুনা।
এব্যাপারে তার পিতা ঘর মালিক কামরুল ইসলাম ঘটনার আগে বৃহস্পতিবার রাতে ও হামলা-লুটপাটের আশঙ্কায় ঝালকাঠি থানার ওসি মো. মাহে আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়া ঘটনার পরে শুক্রবার ১২টায় হাইকোর্টেও আদেশের কপি নিয়ে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দয়ের করলেও থানা পুলিশ রহস্যজনকভাবে নিরবতা পালন করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
অভিযোগে থেকে জানা যায়, খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত পরিদর্শক মো. কামরুল ইসলাম ১৯৮৬ সালে শাহাদাৎ হোসেনের কাছ থেকে ঝালকাঠি শহরের মসজিদ বাড়ি এলাকার মাথায় রিড রোডে নতুনচর মৌজার ২৮৬ এসএ খতিয়ানে (বিএস খতিয়ান ২১৮) ৬৩৫ দাগের ৯২ শতাংশ জমি ক্রয় করে বসবাস করে আসছেন। এর মধ্যে পাশ্ববর্তী মৃত শাহজানের স্ত্রী নুরুন্নাহার জাহান ওই সম্পত্তির ৩৫ শতাংশ জমি দাবি করলে এ নিয়ে ঝালকাঠি সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন কামরুল ইসলাম। আদালতে মামলাটি খারিজ হয়ে গেলে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন (৯০৩/ ২০১৬) দায়ের করেন কামরুল ইসলাম।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. ইমদাদুল হক আজাদের বেঞ্চ গত ২০/০৪/২০১৬ তারিখ বিরোধীয় সম্পত্তিতে উভয় পক্ষকে ৬ মাসের জন্য স্থিতিবস্থা বজায় থাকার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল থাকলেও এ অবস্থায় নুরুন্নাহার জাহান ওই সম্পত্তি দখল করে নিতে পারে এই আশঙ্কায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে ঝালকাঠি থানার ওসির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কামরুল ইসলাম। এর পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় সন্ত্রাসী বাহিনী বাড়ি দখল করা শুরু করলে কামরুল ইসলাম ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রায় আধাঘণ্টা কালক্ষেপণ করে পুলিশ পাঠান তৎক্ষনে বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও দখল সম্পন্ন করে সন্ত্রাসী বাহিনী। ভাঙচুর ও দখলে বাধা দেয়ার সময় কামরুল ইসলামের মেয়ে লুৎফুন্নাহার লুনা, তার স্বামী নাসির নকিবসহ পাঁচজন আহত হন।
লুনা অভিযোগ করেন নুরুন্নাহার জাহানের ভাড়া করা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা প্রিন্স, শান্ত, ছগির, সিদ্দিক ও মোরসেদের নেতৃত্বে শাতাধিক সন্ত্রাসী এ দখল ও লুটপাটে অংশ নেয়। হামলাকারীরা টেলিভিশন, নগদ ৫ হাজার টাকা ও ঘরের মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
বিষয়টি জানতে চাইলে ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.মাহে আলম জানান, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে থানায় একটি দরখাস্ত রেখে গেছেন কামরুল ইসলাম। হামলার পর পরই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখনো সেখানে পুলিশ মোতায়েন আছে। আমি নিজেও সেখানে গিয়েছি। ঘটনার পরে কোন পক্ষ মামলার জন্য অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।