অবহেলিত পল্লী জনপদের নারীদের দারিদ্র্য জয়ের গল্প শুনতে এবং তাদের ভাগ্যবদলের চিত্র স্বচক্ষে দেখতে বাবুগঞ্জ এসেছেন ডেনমার্কের রাণী প্রিন্সেস ম্যারি। বুধবার তিনি রাকুদিয়া গ্রামের পল্লী নারীদের সাথে কৃষক মাঠ স্কুলে এক মতবিনিময় শেষে পায়ে হেঁটে বিভিন্ন খামার ও বাড়ি পরিদর্শন করেন। এসময় প্রায় আড়াই ঘন্টা তিনি গ্রামের নারী কৃষাণীদের সাথে আন্তরিক সময় কাটান।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসময় ক্ষুদ্র কৃষি খামারের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়া বিভিন্ন নারীদের মুখে তাদের দারিদ্র্য জয়ের গল্প শোনেন ড্যানিশ রাণী। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডেনমার্কের রাণী প্রিন্সেস ম্যারি বলেন, পল্লী নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। বাড়িতে ক্ষুদ্র কৃষি খামার গড়ে তুলে তারা নিজেদের স্বাবলম্বী করার মাধ্যমে পরিবারের অভাব দূর করেছেন।
নিজেদের সাহস, আত্মবিশ্বাস ও শ্রম দিয়ে দারিদ্র্য জয় করেছেন যা আজ সত্যিই উন্নয়নের একটি মডেল। এসময় প্রিন্সেস ম্যারি আরো বলেন, বাংলাদেশের সাথে উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে কাজ করছে ডেনমার্ক। বাংলাদেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন বন্ধু হিসেবে সবসময় এদেশের পাশে থাকবে ডেনমার্ক। উপজেলার রাকুদিয়া গ্রামের কৃষক মাঠ স্কুল, বিভিন্ন কৃষি খামার পরিদর্শনকালে এসময় রাণীর সাথে ডেনমার্কের উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী মিসেস উল্লা টরনায়েস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মাইকেল উইনথার ছাড়াও রাণীর প্রধান প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র, উন্নয়ন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ড্যানিশ সাংবাদিকসহ ৩৭ জনের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।
কঠোর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে বুধবার বেলা পৌনে ১১ টায় সেনাবাহিনীর দুটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে ডেনমার্কের রাণীসহ তার ৩৭ জন সফরসঙ্গী বরিশাল বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এসময় বিমানবন্দরে রাণীকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান বাবুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার রায় ও স্থানীয় দেহেরগতি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমান। পরে কড়া পুলিশি প্রহরায় ডেনমার্কের রাণী প্রিন্সেস ম্যারি ও তার সফরসঙ্গীদের প্রকল্প এলাকা দেহেরগতি ইউনিয়নের রাকুদিয়া গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
এসময় সেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মামুনুর রহমান, বিমানবন্দর প্রেসক্লাব সভাপতি আরিফ আহমেদ মুন্না, স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বাবুগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আবদুস সালাম জানান, নিরাপত্তা জনিত কারণে রাণীর এই সফরে গোপনীয়তা বজায় রেখে অতিথি উপস্থিতি সীমিত ও নির্ধারিত করা হয়েছে।
রাণীর ব্যক্তিগত ড্যানিশ নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াও বাবুগঞ্জ ও বিমানবন্দর থানার ওসির নেতৃত্বে প্রায় ৪ প্লাটুন পুলিশ তার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। দুপুর দেড়টার দিকে রাণী প্রিন্সেস ম্যারি ও তার সফরসঙ্গীরা রাকুদিয়া গ্রামের নারীদের সাথে মতবিনিময় শেষে এলজিইডির ড্যানিডা প্রকল্পের রাস্তা এবং কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। বিকেলে একই হেলিকপ্টারে বরিশাল ত্যাগ করেন ড্যানিশ রাণী ও তার সফরসঙ্গীরা।”
শিরোনামবরিশালের খবর