বাবুগঞ্জে সুগন্ধা নদীর আকস্মিক ভাঙনে দক্ষিণ রাকুদিয়া বেড়িবাঁধের প্রায় এক হাজার ফুট অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। একইসঙ্গে দেবে গেছে বেড়িবাঁধের সংযোগ সড়কটিও। এতে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অবস্থিত শতকোটি টাকা মূল্যের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতুটিও ঝুঁকির মুখে রয়েছে। শনিবার রাতে মাত্র দু’রাতের ব্যবধানেই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন উপজেলার দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রামের ৩২টি পরিবার।
ওই গ্রামের আরো প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার তীব্র ভাঙনের মুখে রয়েছেন। বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে প্রায় ৭০ একর জমির ফসল। রাস্তার বিরাট একটি অংশ (আনুমানিক ৮০০ ফুট) আকস্মিক ভাঙনে নদীর বুকে হারিয়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। রোববার সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্দশার এমন করুণ চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলার দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ আইয়ুব আলী মাতুব্বর জানান, গত কয়েক দিনের আকস্মিক ভাঙনে তার নিজের বসতবাড়িসহ স্থানীয় কনক হাওলাদার বাড়ির ৪টি বসতঘর, আমির আলী হাওলাদার বাড়ির ৫টি বতসঘর, তাহের আলী গংদের ৪টি ও খাদেম হোসেনের বাড়ির ৪টি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিক মনির আকন জানান, দক্ষিণ রাকুদিয়া এলাকার আব্দুল মজিদ, রফিজ উদ্দিন, মোশারেফ মাতুব্বর, মাহাবুব হাওলাদার, কালাম হাওলাদার, আবুল বাশার, ইউনুস হাওলাদার, ইদ্রিস আলী, আনিস হাওলাদার, আবু বক্কর ও গনি হাওলাদারের বসতঘর ভেঙে গিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে ৩২টি পরিবার। গৃহহীন এসব পরিবারগুলো এখন সড়কের পাশে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এদিকে সেতুর পাদদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ওই বেড়িবাঁধের প্রায় এক হাজার ফুটেরও বেশি অংশ ভেঙে যাওয়ায় দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশদ্বারে ১০২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতুটিও এখন হুমকির মুখে রয়েছে। এমন আশঙ্কার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু সাঈদ জানান, ইতোমধ্যে আমরা ওই এলাকার ভাঙন প্রতিরোধ ও সেতু রক্ষায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) সাথে যৌথভাবে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ওই প্রকল্পে অর্থায়ন করবে সওজ।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকেও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে পৃথক আরেকটি প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট শেখ মোঃ টিপু সুলতান এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, সেতু সংলগ্ন দক্ষিণ রাকুদিয়া এলাকায় আকস্মিক ভাঙনের বিষয়টি মোবাইলের মাধ্যমে ঢাকায় বসে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক দলীয় নেতাকর্মীদের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পাঠানো হয়েছে।
নদীভাঙন বিষয়ে বিগত সংসদ অধিবেশনেও জোরালোভাবে উত্থাপন করা হয়েছে। ভাঙনরোধ করতে এখন স্থায়ী ও বৃহৎ কয়েকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এগুলো অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এমপি।”
শিরোনামবরিশালের খবর